রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:০২ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
গৌতম বুন্ধ পারিলেয়্য বনে বর্ষা যাপন কালে একটি একাচারী হাতি প্রতিদিন বুদ্ধের সেবা করত, বনের ফল সংগ্রহ করে বুদ্ধকে দান করত। এসময় বনের একটি বানর হস্তীরাজ কর্তৃক বুদ্ধকে সেবা করতে দেখে তারও বুদ্ধকে পূজা করার ইচ্ছা জাগে। ভাদ্র পূর্ণিমাতে সে একটি মৌচাক সংগ্রহ করে বুদ্ধকে দান করেন। মৌচাকে মৌমাছির ছানা ও ডিম থাকায় বুদ্ধ প্রথমে মধু পান করলেন না। বানর তা বুঝতে পেরে মৌচাকটি নিয়ে ছানা ও ডিম পরিস্কার করে পুনরায় বুদ্ধকে দান করলে এবার বুদ্ধ মধু পান করেন। মধুপান করতে দেখে বানর খুশিতে আনন্দে আত্মহারা হয়ে এই গাছ থেকে অন্য গাছের ডালে লাফাতে লাগল। হঠাৎ অসাবধানতাবশতঃ গাছের ডাল ভেঙ্গে বানরটি মাটিতে পড়ে গাছের গোড়ায় আঘাত পেয়ে মৃত্যু বরণ করল। বুদ্ধকে মধুদান এবং বুদ্ধের প্রতি প্রসন্নচিত্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করার পর বানর তাবতিংস স্বর্গে ত্রিশ যোজন বিস্তৃত কনক ও সহস্র অপ্সরা লাভ করল। পারিলেয়্য বনে হস্তিরাজ কর্তৃক ভগবান বুদ্ধের সেবা প্রাপ্তি ও বানরের মধুদানের কারণে এ দিনটি বৌদ্ধদের কাছে স্মরণীয় ও আনন্দ উৎসবমুখর শুভ তিথি পুণ্যময় একটি দিন।
আজ শুভ মধু পূর্ণিমা। এটি সারাবিশ্বের বৌদ্ধদের জন্য অন্যতম এক শুভ তিথি। বর্ষাবাসের দ্বিতীয় পূর্ণিমা তিথি ভাদ্র মাসে এই উৎসব উদযাপন করা হয় বলে এর অপর নাম ভাদ্র পূর্ণিমা। তবে বিশ্বে এটি মধু পূর্ণিমা নামে বেশি পরিচিত। বুদ্ধ জীবনের নানা ঘটনায় এই পূর্ণিমা তিথিটি ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক দিক থেকে বেশ গুরুত্ব বহন করে।
তাই এই দিনটি উপলক্ষে বান্দরবানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার (ক্যং) এবং উজানী পাড়া বৌদ্ধ বিহারে(ক্যং) মধু দান করে ধর্মীয় আনুষ্ঠিকতা শুরু করে। সকালে নানান বয়সে পূজারিগণ হাতে মধু, ফুল ও ফল দান করে পুণ্য সঞ্চয় করেন।
দিন ব্যাপি কর্মসূচীতে দুপুরে বুদ্ধের উদ্দেশ্যে আহার(ছোঁওয়াই) দান বিকালে ধর্ম দেশনা ও সন্ধ্যায় হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হবে।
আজকের পূর্ণিমা হচ্ছে তিন মাসের বর্ষবাসের শেষ পুর্ণিমা। আগামী ১৩ অক্টোবর রবিবার পূর্ণিমাতে হবে প্রবারণা পূর্ণিমা অর্থাৎ মাহাঃ ওয়াগ্যাই পোয়েহ। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের তিন মাস বর্ষবাস শেষ হবে।
Leave a Reply