বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
শফিক আজাদ,উখিয়া সংবাদদাতাঃ
বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য এখনো রোহিঙ্গারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে সাগর পাড়ি দিচ্ছে। নতুন করে এভাবে নৌকায় করে সাগর পাড়ি দেওয়ার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় ২০১৫ সালের মতো মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের কর্মকর্তা ও ত্রাণকর্মীদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
কোস্টগার্ড সুত্র জানিয়েছে, স¤প্রতি বঙ্গোপসাগর দিয়ে মাছ ধরার নৌকায় করে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টাকালে টেকনাফ থেকে ৩৩ রোহিঙ্গা ও ছয় বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে মিয়ানমারের পশ্চিমের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গাদের কয়েকটি নৌকা ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন উখিয়ার রোহিঙ্গা নেতারা।
নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে সাগর সাধারণত শান্ত থাকে। আর এই সময়টাতে সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারীরা মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের সাগরপথে নৌকায় করে পাচার করে। থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া অভিমুখী বিপদসঙ্কুল এই যাত্রায় অনেক সময় ছোট নৌকায় অতিরিক্ত লোক থাকায় সেগুলো সাগরে ডুবে যায় এবং অনেকের মৃত্যু হয়।
রাখাইনের রাজধানী সিতওয়ে থেকে সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের নৌকায় করে সাগর পাড়ি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন রোহিঙ্গা নেতারা। তবে এ পর্যন্ত কয়টি নৌকা মিয়ানমার উপকূল ছেড়ে গেছে সে ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
উখিয়ায় আশ্রিত রোহিঙ্গা দিল মোহাম্মদ জানান, অক্টোবরের প্রথম থেকে এ পর্যন্ত অন্তত চারটি নৌকা ছেড়ে গেছে। এর কয়েকটি ইতিমধ্যে মালয়েশিয়া পৌঁছে গেছে। এসব নৌকার কয়েকটিতে নারী ও শিশু রয়েছে যারা মালয়েশিয়া থাকা স্বজনদের কাছে যাওয়ার জন্য দেশ ছেড়েছেন।
তারা আরো বলেছেন, ‘রোহিঙ্গারা ফাঁদে আটকা পড়েছে। তাদের কোথাও যাওয়ার উপায় নেই। কেউ তাদের চায় না এবং তারা এখন প্রত্যাবাসনের অনিশ্চিয়তায় পড়েছে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের বলেন, গত সপ্তাহ খানেক পূর্বে টেকনাফের সমুদ্র উপকূল থেকে কোস্টগার্ড কর্তৃক উদ্ধারকৃতরা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পের রোহিঙ্গা বলে জানা গেলেও বর্তমানে নতুন করে এ ধরনের কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই, যদি পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে উপকূলে কয়েকটি গণকবরের সন্ধান পাওয়ার পর থাইল্যান্ড মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ওই সময় অনেক পাচারকারী নৌকাবোঝাই রোহিঙ্গাদের আন্দামান সাগরে ফেলে রেখে পালিয়ে যেতে শুরু করে।
শফিক আজাদ
Leave a Reply