বান্দরবান প্রতিনিধি, আবদুর রশিদ ঘুমধুম থেকে ফিরেঃ
মিয়ানমারের দেয়া তালিকা অনুযায়ি কক্সবাজারের টেকনাফে আশ্রিত ১হাজার ৪১ পরিবারের ৩ হাজার ৪শ ৫০ জন রোহিঙ্গাকে তাদের নিজ দেশে ফেরাতে দিনক্ষণ ঠিক থাকলেও আজ ২২ আগস্ট প্রত্যাবাসন হচ্ছে না। এনিয়ে দুই দফায় পিছিয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যক্রম। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা তাদের দেয়া শর্ত পূরণ না হলে একজনও এদেশ(বাংলাদেশ) থেকে যাবে না।এবং মরলে এদেশেই মরবো।
বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে এ সাক্ষাৎকার শুরু হয়। সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ত, নিরাপত্তা, বসতভিটাসহ সম্পদ ফেরত ও নিপীড়নের বিচার নিশ্চিত না হলে মিয়ানমারে ফিরতে নারাজ রোহিঙ্গারা। প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার সরকার কর্তৃক স্বীকৃত রোহিঙ্গারা জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা- ইউএনএইচসিআর এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার- আরআরআরসি কার্যালয়ের প্রতিনিধিদের কাছে সাক্ষাৎকারে এমনটি জানিয়েছেন। সাক্ষাৎকার শেষে হলরুম থেকে বের হওয়া ২৬ নম্বর ক্যাম্পের এ-ব্লকের বাসিন্দা মুহাম্মদ রিয়াজ (৩২), রশিদ আমিন (৪৫) ও আই-ব্লকের হোসেন আহমদ (৫২) এমন তথ্য জানান।
সাক্ষাৎকার দিতে আসা রোহিঙ্গা নারী ডি-৩ ব্লকের আনোয়ারা বিবি ও জাহেদা বেগম বলেন, বুধবার সকালে ইউএনএইচসিআর ও ক্যাম্প ইনচার্জের প্রতিনিধিরা ঘরে গিয়ে সিআইসি কার্যালয়ে আসতে বলেছে। এই তালিকায় নাকি আমাদের পরিবারের নাম রয়েছে, নাম যেহেতু রয়েছে, তাই যাব কি যাব না তা সাক্ষাৎকারে বলেছি।
এসময় তারা আরো বলেন, নিজ দেশে ফেরার ইচ্ছা সকলের থাকে ,আমাদেরও আছে। কিন্তু আমাদের শর্ত না মানলে আমরা যাবো না।মরলে এইদেশেই মরবো। তবুও যাবো না।
রোহিঙ্গাদের এসব দাবির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শালবাগানের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ (সিআইসি) মোহাম্মদ খালেদ হোসেন বলেন, শালবন শিবিরে প্রত্যাবাসন তালিকায় নাম থাকা রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। বাধা ছাড়া রোহিঙ্গারা সাক্ষাৎকার দিতে আসছেন। কিন্তু তিনি অফিসের বাহিরের সিদ্ধান্ত ছাড়াই কিছুই বলতে পারবেন না।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম বলেন, তারা নিজ দেশে ফিরতে যেইসব শর্ত দিয়েছে মিয়ানমার সরকার যদি ওই শর্তগুলো মেনে নিয়ে নাগরিকত্ব দিলে তারা স্বইচ্ছায় ফিরে যাবে। তাদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছুই করা এইমুহুর্তে সম্ভব না।
উল্লেখ্য যে, ২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে একযোগে হামলার ঘটনা ঘটে। প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন শুরু করে। প্রান বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। পুরনোসহ উখিয়া-টেকনাফের ৩০টি শিবিরে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। তবে জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।
Leave a Reply