শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪৭ অপরাহ্ন
আব্দুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘদিন ধরে বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলায় ম্যালেরিয়া প্রবণতা হ্রাসে ম্যালেরিয়া রির্সাচ গ্রুপ (এমআরজি) গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। ২০১৮-১৯ সনে গবেষণার দ্বিতীয় ধাপে খাগড়াছড়ির একটি উপজেলা ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দূর্গম এলাকার ৭৫জন বিভিন্ন বসয়ী রোগী নিয়ে গবেষণা পরিচালিত হয়। কিন্তু যেসব রোগী নিয়ে গবেষণা হয়েছে তাদের যাতায়ত ও আপ্যায়ন ও আনুষাঙ্গিক খরচের টাকা বিতরণে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, খাগড়াছড়ির ১৫জন ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৭৫জন রোগী বাচাই করে তাদের সংক্রামিত রোগ, জনসচেতনতা, রোগের ধরণ ও গতি প্রকৃতি সম্পর্কে গবেষণা চলে। এই গবেষনার জন্য নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান ছৈয়দ নুর কাদেরী রোগীদের পরীক্ষা নিরীক্ষাসহ অর্থ বিতরণের দায়িত্ব পান।
যাদের নিয়ে গবেষণা হয়েছে এমন কয়েকজন রোগীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ি সরকারী হাসপাতালের ল্যাব টেকনিশিয়ান ছৈয়দ নুর কাদেরীর মাধ্যমে তারা রক্ত পরীক্ষা করেছেন। তবে তাদেরকে নিয়ে গবেষণা যে হচ্ছে বা বরাদ্দের কোন তথ্য তারা জানতেন না।
দোছড়ি ইউনিয়নের হরিণখাইয়া এলাকার বাসিন্দা জনুয়ারা বেগম, কালুরঘাট এলাকার ছাইদুল ইসলাম, বাহিরমাঠ এলাকার সমিরা আক্তার জানান, একটি অনুষ্ঠানে তাদের কিছু টাকা দেন ল্যাব টেকনিশিয়ান ছৈয়দ নুর কাদেরীর হাতে। পরে হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার পর অন্য রোগীদের হাতে ভিন্ন ভিন্ন অংকের টাকা দেখতে পান। তাদের মধ্যে কাউকে ২হাজার, কাউকে আড়াই হাজার আবার কাউকে ৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়। যদিওবা গবেষণা বাবদ তাদের প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪হাজার টাকা আপ্যায়ন খরচ।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ল্যাব টেকনিশিয়ান ছৈয়দ নুর কাদেরীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং ম্যালেরিয়া রির্সাচ গ্রুপ কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করার কথা বলেন।
এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও প: প: কর্মকর্তা ডা: আবু জাফর মোহাম্মদ ছলিম বলেন, কয়েকজন রোগীর কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছিলাম। তারা টাকা পেয়েছে বলে স্বীকার করেছে। তবে নির্ধারিত টাকা থেকে কর্তনের বিষয় তিনি জানেন না।
প্রসঙ্গত, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ল্যাব টেকনিশিয়ান ছৈয়দ নুর কাদেরী নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে ২০১০সালে যোগদান করেন। বর্তমানে তার স্ত্রী হামিদা বিবিও একই হাসপাতালে নার্স হিসেবে কর্মরত। স্বামী-স্ত্রী একই কর্মস্থলে দীর্ঘদিন থাকার কারনে স্থানীয় নানা রকম বিবাদে জড়িয়ে পড়েছেন তারা। বাজারের ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের সাথে গোপন আতাত করে হাসপাতালে রোগীদের হয়রাণি, হাসপাতালে ল্যাবরেটরী শাখায় বিভিন্ন পরীক্ষায় রোগীর কাছ থেকে অর্থ আদায়ের স্লিপ না দেওয়া, অফিস চলাকালীন সময়ে বাজারে আড্ডা ও প্রাইভেট ক্লিনিকে বানিজ্যের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
Leave a Reply