শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:১২ অপরাহ্ন
র্যামবো ত্রিপুরা; থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধিঃ
বান্দরবানের থানচিতে বৌদ্ধ বিহার ভবন অর্ধ নির্মিত অবস্থায় রেখে ঠিকাদার সংস্থা উধাও হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ধর্মীয়ভাবে বৌদ্ধ ধর্ন্মালম্বীদের প্রবারনা, বর্ষাবাস, সাংগ্রাই, কঠিন চীবর দানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্পাদনসহ ভিক্ষু সংঘের বসবাস নানান ভাবে চরম ভোগান্তিতে জিনিঅং পাড়াবাসী, ভিক্ষু, দায়ক-দায়িকাদের অভিযোগ। ঠিকাদার প্রদিষ্ঠানকে অধিকাংশ বিল পরিশোধ করার পরও বৌদ্ধ বিহার ভবন অর্ধনির্মিত অবস্থায় রেখে কোন খোঁজ খবর নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।
জিনিংঅং পাড়া বাসী সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০১৭ সালে টিনসেট মাচাং বৌদ্ধ বিহার ভবনটি ভেঁঙ্গে নতুনভাবে আধা পাকা ভবন নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করেন পাড়াবাসী ও বৌদ্ধবিহার কমিটি। পাড়ার ৫৭ পরিবারের প্রায় ৮ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে ৩৬ ফুট ৪৩ ফুট বিহার নির্মানের ঝাংকার বালির, ইট, পাথর, রড, সিমেন্ট ক্রয় করে বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গনে জমা করে স্থানীয় রাজ মিস্ত্রি দিয়ে ফ্লোর, পিলার, নির্মান কাজ চলমান অবস্থায় রাখা হয়েছিল। প্রায় ২৫% বাস্তবায়নের পর একই বছরে টাকা সংকুলান না হলে পূনরায় পাড়াবাসীগণ টাকা সংগ্রহের আলোচনা করেন ও সিন্ধান্ত হয় ।
এরই মধ্যে ২০১৮ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড অর্থায়নের ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পাড়াবাসীদের ২৫% নির্মিত বৌদ্ধ বিহার ক্যাংঘর নির্মানের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তারপর একই অর্থবছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক কার্যাদেশ প্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা মালিক মোহাম্মদ হারুনর রশিদ ও উন্নয়ন বোর্ড এর সাইট ইজ্ঞিনিয়ার মোহাম্মদ এরশাদসহ পাড়াবাসী পূনরায় বৈঠকে বসেন । সে বৈঠকে পাড়াবাসীদের বাকি অংশ কাজ ঠিকাদার শেষ করবেন সেখানে বারান্দা সহ টিন সটে করা হবে মর্মে সিদ্ধান্ত হয়। পাড়াবাসীদের ব্যয় কৃত ৮ লক্ষ টাকা ঠিকাদার সংস্থা পাড়াবাসীদের ফেরত দেয়া সিদ্ধান্ত হয় এবং বৌদ্ধ বিহার (ক্যাংঘর) ভবন নির্মানের সিন্ধান্ত হয়। কিন্তু কার্যাদেশ নিয়ে ঠিকাদার সংস্থা অর্ধনির্মিত অবস্থা ফেলে জুন’১৯ মাসের কাজ ফেলে রেখে চলে যায় ।
জিনিঅং পাড়া কারবারী ফোথোয়াইচিং মারমা জানান, আমি সহ পাড়াবাসী ঠিকাদার সংস্থা মালিক মোহাম্মদ হারুন রশিদকে বারবার ফোন করলেও আসবো আসবো বলে ফোন কেটে দেয় । বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটি সাধারন সম্পাদক মংসাহ্লা মারমা জানান, পাড়াবাসীদের পক্ষে ব্যয়কৃত টাকা ফেরত দেয়ার কথা তিনি (ঠিকাদার সংস্থা মালিক) আমাদের আসবো আসবো বলে আর আসেনা । বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটি কোষাধক্ষ্য এসিংমং মারমা জানান, অর্ধনির্মিত অবস্থা রেখে দেওয়ায় আমাদের বৌদ্ধ বিহারের নানানভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান গুলি করার সম্ভব হচ্ছে না, আমরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছি ।
সরেজমিনে গিয়ে পাড়াবাসীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঠিকাদার সংস্থা শুধু মাত্র বারান্দা,বৌদ্ধ বিহারের (ক্যাংঘর) ওয়াল বসিয়ে প্লাস্টার করা হয়েছে মাত্র। বাকি কাজ গুলি পাড়াবাসীদের অর্থায়নের করা হয়েছে বলে জানান।
এই নিয়ে জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী সাইট ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ এরশাদ বলেন, পাড়াবাসী ও ঠিকাদার সংস্থা মালিকসহ বৈঠকের সময় উপস্থিত থাকার কথা ও কাজের ধীরগতি চলার কথা স্বীকার করেন তিনি। তবে সব বিষয়ের আামাদের স্যার আছেন তিনি বলতে পারবেন। পরে ঐ প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদার সংস্থা মালিক মোহাম্মদ হারুন রশিদ বলেন, আমি বান্দরবান জেলা পরিষদের একটা টেন্ডার নিয়ে তিন মাস যাবত ব্যস্ততার মধ্যে আছি, তাছাড়া আমি আপতত অসুস্থ, সুস্থ হলে সাংবাদিকদের বিস্তারিত বলতে পারবো বলে মুঠো ফোন কেটে দেয়।
এই বিষয়ের জানতে চাওয়া হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয় বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোঃ ইয়াছির আরাফাত বলেন, জিনিঅং পাড়া ও নাইন্দারী পাড়া দুইটি বৌদ্ধ বিহার (ক্যাংঘর)অর্ধনির্মিত নির্মানের বাস্তবায়ন কাজের সরকারি ভাবে বাজেট না থাকায় চলমান কাজ বন্ধ রয়েছে, শীঘ্রই বাজেট এসে যাবে, বাজেট এলে কাজ শুরু হয়ে যাবে।
Leave a Reply