শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৩১ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
দূর্নীতি দমন কমিশনারের নির্দেশের পরও বান্দরবানে মৎস্য প্রকল্পের আত্মসাৎকৃত প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকা এখনো ফেরত দেয়নি মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন। বান্দরবান সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন দুটি প্রকল্পের নামে নিজে কাজ করে ঐ টাকা আত্মসাত করেন অভিযোগ রয়েছে। দূর্নীতি দমন কমিশনের গনশুনানিতে ঐ মৎস্য কর্মকর্তা টাকা আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করে নিলে কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম জেলা প্রশাসকের কাছে টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু গনশুনানির বিশ দিন সময় অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত ঐ মৎস্য কর্মকর্তা টাকা ফেরত দেননি। বরং দূর্নীতির বিষয়টি তিনি এখন অস্বীকার করছেন।
গত ১৬ এপ্রিল বান্দরবানে দূর্নীতি দমন কমিশনের গুনশুনানিটি অনুষ্ঠিত হয়। ঐ শুনানিতে প্রকল্পের ঠিকাদার মৃত উচনু মারমার পরিবারকে ফেরতকৃত টাকা বুঝিয়ে দেয়ার জন্য কমিশনার জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। কিন্তু টাকা ফেরত না পেয়ে ঠিকাদারের ন্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা এখন অসহায় হয়ে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। অন্যদিকে জেলা প্রশাসক অভিযুক্ত মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কমিশন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে চিঠি দিয়েছেন।
এদিকে ৭ মে মঙ্গলবার প্রকল্পের ঠিকাদার মৃত উচনু মারমার ন্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা বান্দরবান প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আত্মসাতকৃত টাকা ফেরত পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে চট্রগ্রাম অঞ্চলে মৎস্য চাষ উন্নয়ন ও সম্প্রসারন প্রকল্পের আওতায় বান্দরবানে দুটি জলাশয় নির্মান করে দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎ করায় সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিনকে দুটি প্রকল্পের মোট ৭ লক্ষ ৩৭ হাজর টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন দূর্নীতি দমনের কমিশনার। ঠিকাদার উচনু মারমার ন্ত্রী লিপি প্রু মারমা দূর্নীতি দমন কমিশনে সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে গণশুনানিতে অভিযোগটি উত্থাপন করা হয়। সেখানে মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন তার অভিযোগ স্বীকার করে নিলে দূর্নীতি দমনের কমিশনার আত্মসাতকৃত অর্থ জেলা প্রশাসকের কাছে ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন। ১৭ এপ্রিল এই টাকা জেলা প্রশাসকের কাছে ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন টাকা ফেরত দেয়নি।
জেলা প্রশাসক দাউদুল ইসলাম জানান, বার বার তাগাদা দেয়ার পরও মৎস্য কর্মকর্তা টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করছেন। তার বিরুদ্ধে কমিশনে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
ঠিকাদার উচনু মারমার ন্ত্রী লিলি প্রু মারমা সংবাদ সম্মেলনে জানান, তার স্বামী উচনু মারমা ঠিকাদার হিসেবে মৎস্য প্রকল্প দুটির কাজ করার সময়ে হঠাৎ মারা যান। এ সময়ে মৎস্য কর্মকর্তা কৌশল নিয়ে নিজে কাজ করে পুরো টাকা দূর্নীতির মাধ্যমে তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেন। পরে দূর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করা হলে কমিশনার গনশুনানিতে ঐ টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু এখনো ঐ টাকা আমরা পায়নি। পুরো পরিবার এখন অর্থ কষ্ঠে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে বলে পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন।
এদিকে মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন বলছেন, গনশুনানিতে জোরপূর্বক তাকে দূর্নীতির কথা স্বীকার করানো হয়েছে। তিনি প্রকল্পের দূর্নীতি অনিয়ম ও অর্থআত্মসাতের সাথে জড়িত নয় বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
Leave a Reply