রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:১০ অপরাহ্ন
নিউজ ডেস্কঃ
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নতুন প্রধান হতে যাচ্ছেন বর্তমান কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল (কিউ এম জি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদ বিজিবিএম,পিবিজিএম,বিজিবিএমএস,পিএসসি,জি। ১৮ জুন,২০১৮ তারিখে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে যুগ্ম সচিব মো. আবু বকর সিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন ২৬জুন ২০১৮ তারিখে।
উল্লেখ্য, বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক আগামী ২৫ জুন ২০১৮ তারিখে তার নির্ধারিত মেয়াদকাল পূর্ণ করার পর অবসরে গমন করবেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এশিয়া মহাদেমের অন্যতম সেরা সেনাবাহিনী। দেশের সর্বভৌমত্ত রক্ষার পাশাপাশি এই বাহিনী আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিধানে এবং সমর্থ হয়েছে এবং হচ্ছে। এই বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্যে অসাধারণ নেতৃত্বগুণ,পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন যোগ্যতা/দক্ষতা, সুনির্দিষ্ট অপারেশনাল/কমান্ড অভিজ্ঞতা,ডায়নামিজম এবং সর্বোপরি সর্বোচ্চ নেতৃত্বের প্রতি বিশ^স্ততা ইত্যাদি বিষয়কে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদ বর্ণিত সকল গুণ ও দক্ষতার নিরিখে উত্তীর্ণ একজন চৌকষ সামরিক অফিসার। তিনি ১৯৬১ সালে চাঁদপুর জেলার মতলবের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা-মরহুম আব্দুল ওয়াদুদ আহমেদ। মাতা-রেনুজা বেগম। পিতা বাংলাদেশ বিমানের সাবেক কর্মকর্তা ছিলেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ তার সামরিক বাহিনীর ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই মেধাবী অফিসার হিসেবে সকলের নিকট পরিচিত ছিলেন।
তিনি ৮ম বাংলাদেম মিলিটারি একাডেমি দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের (৮ম বি এম এ লং কোর্স) ক্যাডেট হিসেবে ১৯৮৩ সালের ১০ জুন তারিখে সেনাবাহিনীর আর্টিলারি কোরে কমিশনপ্রাপ্ত হন। তার বেসিক কোর্সের অপিসারগণের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে মেধাবী ও পরিশ্রমী। ফলে সামরিক জীবনের শুরুতেই তিনি তার বেসিক কোর্সে প্রথম সারির একজন অফিসার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। বেসিক কোর্স ভালো ফলাফল অর্জনের কারণে তাকে তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রামে কাউন্টার ইন্সার্জেন্সী অপারেশনে নিয়োজিত আর্টিলারি ব্রিগেডের জিএসও-৩ (অপারেশন) দায়িত্বে নিয়োগ প্রদান করা হয়। শুধুমাত্র বেসিক কোর্সেই তিনি উচ্চমানের ফলাফল অর্জন করেন। এই কোর্সে সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স কোর্স এবং মিলিটারি সাইন্স কোর্স। বেসিক ইন্টেলিজেন্স কোর্স এবং মিলিটারি সাইন্স কোর্সে তিনি দ্বিতীয় স্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজ ১৯৮৯-১৯৯০ সালে আর্টিলারি সেন্টার ও স্কুল, হালিশহর,চট্টগ্রাম হতে অফিসার্স গানারী স্টাফ কোর্স করার পর তাকে ১৯৯২-১৯৯৩ সালে ভারতের স্কুল অফ আর্টিলারি, দেওলালীতে প্রেরণ করা হয় লং গানারী স্টাফ কোর্স (ফিল্ড) করার জন্যে। উক্ত কোর্সে তিনি অসাধারণ ফলাফল অর্জন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি বিদেশে উজ্জ্বল করেছে। অতঃপর তিনি মিরপুর ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ থেকে ১৯৯৪-১৯৯৫ সালে সাফল্যের সঙ্গে আর্মি ষ্টাফ কোর্স-১৯ সম্পন্ন করেন।
তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অধীনে ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে ইরাক-কুয়েত এ সামরিক পর্যবেক্ষক এবং ২০০৫-২০০৬ সালে সুদানে জাতিসংঘ মিশনে ফোর্স কমান্ডার এর সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রশিক্ষক হিসেবেও লেফটেন্যান্ট জেনারেল আজিজের সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি আর্টিলারি সেন্টার এন্ড স্কুলে প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন দীর্ঘদিন। এছাড়া স্কুল অফ মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স তথ্য এসএমআইয়ের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার স্ত্রী বেগম দিলশাদ নাহার আজিজ একজন গৃহিনী। তার তিন পুত্র সন্তান আছে। খেলাধুলা প্রিয় এই জেনারেল গলফ খেলায় বিশেষ উৎসাহী ও পারদর্শী। অবসরে তিনি বই পড়েন।
জেনারেল আজিজ তার নেতৃত্বগুণ,কর্মদক্ষতা,পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন ক্ষমতা এবং অসাধারণ মানবিকতা দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা বাংলাদেশকে উন্নতির শীর্ষে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন বলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল পদবীর সদস্যগণ মত পোষণ করেন। তারা শিখরে পৌঁছে দিয়ে এসেছেন,একইভাবে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উত্তরণের জন্যে কাজ করবে।
Leave a Reply