শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:২২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বান্দরবানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৬শ পরিবারকে শক্তি ফাউন্ডেশনের ত্রাণ বিতরণ নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড় ধ্বসে শিশুসহ একই পরিবারের আহত ৪ বাান্দরবানে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে বাল্যবিবাহ নিরোধকল্পে বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন করল গ্রীনহিল দি মারমা কো অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন ৯ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন খাগড়াছড়ি মানিকছড়িতে মাশরুম চাষে সফল ইঞ্জিনিয়ার সানি মারমা বান্দরবান রাজার মাঠে শুরু হতে যাচ্ছে গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আওয়ামীলীগের ত্রি- বার্ষিক সম্মেলন: সভাপতি মংপু ও সাঃ সম্পাদক নাছির পাহাড়ে কি নাম ধরে তারা আসছে সেটা আমাদের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে না- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাঙ্গামাটি শহরে হঠাৎ দেখা মিলল ‘দাগি-বসন্ত’ পাখি বান্দরবান রাজার মাঠ সংলগ্ন পুকুর থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারীতে সর্বত্র ডাকাত আতংক পুলিশ-বিজিবির যৌথ টহল : আটক ২

নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারীতে সর্বত্র ডাকাত আতংক পুলিশ-বিজিবির যৌথ টহল : আটক ২

আব্দুল হামিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধিঃ
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারীতে গত এক সপ্তাহ যাবৎ ইউনিয়নের সর্বত্র এলাকায় ডাকাত ও অপহরণকারীদের আতংকে রাতযাপন করছে জনসাধারন। এরই মধ্যে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যদের টহল অব্যাহত রয়েছে। তারপরও লোকজনের আতংক কাটছেনা। প্রতিদিন কোন না কোন গ্রাম থেকে ডাকাত সদস্যদের এলাকায় প্রবেশ করেছে মর্মে মাইকিং চলছে।

গত সপ্তাহে মাত্র একদিনের ব্যবধানে বাইশারীর পাশর্^বর্তী ইউনিয়ন গর্জনীয়া বড়বিলের নজুমাতবর পাড়া গ্রাম থেকে তিনজনকে অপহরণ পূর্বক মুক্তিপন আদায় করে অপহরকারীরা। এছাড়া অপহরনের পাশাপাশি বাড়ীঘরে লুটতরাজ চালিয়ে সর্বস্ব নিয়ে যায় ডাকাতদলের সদস্যরা।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার পুলিশ ও জনতার সহযোগীতায় ডাকাতদলের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড ফাক্রিকাটার বাসিন্দা নুরুল ইসলামের পুত্র গিয়াস উদ্দিন (২১) ও কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের গজালিয়া এলাকার বাসিন্দা মোঃ বেলালের পুত্র তারেকুল ইসলাম (২৪) প্রকাশ তারেক ডাকাত। গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশ ও জনতার সামনে অকপটে স্বীকার করে, তারা শীর্ষ সন্ত্রাসী মোঃ আনোয়ার প্রকাশ আনাইয়্যা বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। তাদের দুইজনের পকেটে থাকা মোবাইল ফোনে ডাকাত আনাইয়্যার মোবাইল নাম্বারও রয়েছে।

রাত নামলেই শুরু হয় গর্জনীয়া ও বাইশারী ইউনিয়নে ডাকাত আনাইয়্যা বাহিনীর তৎপরতা। ডাকাত আতংকে লোকজন রাতের বেলা অন্যত্র পালিয়ে রাতযাপন করছে বলে একাধিক গ্রামবাসী জানান।

শীর্ষ সন্ত্রাসী ডাকাত আনাইয়্যা বেপরোয়া ভাবে লম্বাবিল, ঘোনা পাড়া, চাইল্যাতলি ও আলীক্ষ্যং সড়কে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘুরাফেরা করছে। তার ভয়ে স্থানীয় আশপাশের লোকজন মুখ খুলতে ভয় পায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডাকাত আনাইয়্যার বিরুদ্ধে মুখ খুললেই তাদেরকে সরাসরি হত্যার হুমকি প্রদান করছে। এছাড়া ডাকাত আনাইয়্যার হাতে এ পর্যন্ত বাইশারী, দৌছড়ি, ঈদগড়, গর্জনীয়া ও বাইশারী-ঈদগড়-ঈদঘাঁও সড়কে অর্ধশত লোকজন অপহরণের শিকার হয়েছে এবং তার হাতে খুন হয়েছে নিরহ জনসাধারন সহ চার ব্যক্তি। এলাকাবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী ডাকাত আনাইয়্যা এখন বেপরোয়া। প্রকাশ্যে দিবালোকে অস্ত্র সহ চলাফেরা ও তার হুংকারে সাধারণ জনগন আতংকের মধ্যে জীবন-যাপন করছে।

অপহরনের শিকার একাধিক লোকজন জানান, বর্তমানে আনাইয়্যা বাহিনী অত্যন্ত সক্রিয়। তার দলে রয়েছে সশস্ত্র ১৫/২০ জনের মত সন্ত্রাসী। যার ফলে এলাকায় যে কোন সময় আরো বড় ধরনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলম জানান, ডাকাত আনাইয়্যা প্রায় সময় তার মুঠোফোনে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ সহ হত্যার হুমকি দিচ্ছে এবং যে কোন সময় এলাকায় বড় ধরনের ঘটনার সৃষ্টি করবে বলে সাফ সাফ জানিয়ে দিচ্ছে। এ নিয়ে তিনি নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় সাধারন ডাইরী সহ বিষয়টি পুলিশ-বিজিবির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে াবহিত করছেন বলে জানান।

গত বৃহস্পতিবার নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলমগীর শেখ বাইশারী বাজার চত্বরে স্থানীয়দের নিয়ে এক জরুরী মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। ঐ সময় তিনি বলেন, পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয়দের সহযোগীতা পেলে অবশ্যই আনাইয়্যা বাহিনীকে গ্রেপ্তার পূর্বক আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। তাই তিনি এলাকার লোকজনকে মতবিরোধ ভূলে গিয়ে, দলমত নির্বিশেষে সন্ত্রাসী ধরতে সকলের সহযোগীতা কামনা করেন। এই সময় উপস্থিত থেকে আরো বক্তব্য রাখেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলম, বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক মোঃ আবু মুসা।

অপরদিকে বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক মোঃ আবু মুসা জানান, সন্ত্রাসী ধরতে তিনি সব সময় তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে প্রস্তুত রয়েছেন। পাশাপাশি বাইশারী ইউনিয়নের সম্ভাব্য ঝুকিপূর্ণ স্থানে চেকপোষ্ট বসিয়ে রাতজেগে পাহারা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পুলিশের আরো একটি দল টহলের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনায় নিয়োজিত রয়েছে।

তিনি আরো জানান, বিগত দিনে বাইশারী ইউনিয়নকে সন্ত্রাস মুক্ত করতে পাড়ায়-মহল্লায় স্থানীয়দের নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। যার ফলে পুরো এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি জনগনও সতর্ক অবস্থায় পাহারা ছিল। বিগত এক মাস যাবৎ জনসাধারনের পাহারা না থাকায় ডাকাত দলের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে আবারো এলাকায় পাহারা বসানো হয়েছে। পুলিশের টহলও অব্যাহত রয়েছে। যে কোন মূহুর্তে শীর্ষ সন্ত্রাসী আনাইয়্যা ডাকাত সহ তার বাহিনীকে ধরতে সক্ষম হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

ভালো লাগলে সংবাদটি শেয়ার করুন....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2018 Bandarban Pratidin.com
Design & Developed BY CHT Technology