শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৪৭ পূর্বাহ্ন
আব্দুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির প্রতিটি বাজারের পান যাচ্ছে দেশ পেরিয়ে এখন মধ্যপ্রাচ্যে। সাপ্তাহিক হাট থেকে ব্যবসায়ীরা এসব পান সংগ্রহ করে থাকে। উপজেলার ৫ ইউনিয়নের পাহাড়ের ঢালুতে স্থানীয় বাঙালি ও উপ-জাতিরা এসব পানের চাষ করে থাকেন।
প্রতিটি ইউনিয়নে ৫শ থেকে ৮শ পর্যন্ত ছোট বড় মিলে পানের বরজ থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন, পান ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাইশারী ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ আবুল কালাম। এসব পানের বরজ থেকে প্রতি সপ্তাহে হাটের দিন চাষীরা পান বিক্রয়ের জন্য বাজারে নিয়ে আসেন। বর্তমানে পান চাষ করে এলাকায় কয়েক হাজার লোকজন স্বাবলম্বী হয়েছেন বলেও তিনি জানান।
বর্তমানে উপজেলায় দুই ধরনের পান চাষ হচ্ছে। দুই ধরনের মধ্যে রয়েছে, দেশি জাতের ও মিষ্টি জাতের পান। প্রচুর পরিমাণ মিষ্টি পান বিগত এক যুগ যাবৎ উপজেলার বাইশারী, দৌছড়ি, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর, সোনাইছড়ি, ও ঘুমধুম ইউনিয়নের সমতল ও পাহাড়ী ঢালুতে চাষ হচ্ছে বলে জানালেন পান চাষী বটন চৌধুরী, মোঃ এনামুল হক, নুরুল আজিম, জালাল আহম্মদ, আব্দুল জলিল, মোঃ হেলাল, সোনা মিয়া, বাবুল, থোয়াইছা মং মার্মা, চাইহ্লাঅং চাক, ও ওসমানসহ আরো অনেকে।
উপ-জাতিয় পান চাষী হ্লামংছাইন মার্মা সাথে কথা বলে জানা যায়, আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবং অতিবৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া থেকে রক্ষা পেলে এবার পান চাষ করে অধিক লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া এখনও পর্যন্ত বাজারে পানের দাম অনেক চড়া রয়েছে। প্রতি বিরা পান দুইশত থেকে তিনশত টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। তবে এবারে চাষ ভাল হওয়ায় পান চাষীরা প্রচুর লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পান ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বটন চৌধুরী বলেন, উপজেলায় যতগুলো পানের বরজ রয়েছে সবই নিজেদের উদ্যোগে করা। সরকারী ভাবে এতে কোন ধরনের সহযোগীতা তারা পাচ্ছে না। কৃষি কর্মকর্তারা ও পান নিয়ে তদারকি করেনা। পান চাষীরা যদি সরকারি ভাবে উদ্যোগ ও সহায়তা পায় তাহলে আরো ভাল ফলনের সম্ভাবনার কথা জানান। অধিকাংশ পান চাষীরা স্থানীয় বাজারের আব্দুল করিম বান্টুর কিটনাশক দোকান থেকে বিভিন্ন ধরনের সার ভিটামিন কিটনাশক তার পরামর্শ নিয়ে পান চাষে ঝুঁকছেন। এতে তারা পান চাষ করে মোটামুটি ভালভাবে লাভবান হচ্ছে।
এছাড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ বাইশারী হতে প্রধান সড়কে পৌছাতে বিভিন্ন জায়গায় সরকারি টুল টেক্সের পাশাপাশি আরো অনেক ট্যাক্স দিতে হয়। তাই বহিরাগত ব্যবসায়ীরা বাজারে আসতে চায় না।
সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে পান চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে দেশে প্রচুর পরিমাণ পানের চাহিদা রয়েছে। পাশাপাশি এসব পান দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে ও রপ্তানি হচ্ছে। সরকার পাচ্ছে পান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব। তাছাড়া প্রতি বছর শুকনো মৌসুমে পানের আগা/চারা বিক্রয় করে চাষীরা লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে থাকেন। তবে অধিকাংশ ব্যবসায়ীর অভিযোগ সরকারী টুল ট্যাক্স দেওয়ার পর ও ব্যবসায়ীদের নানা ধরনের হয়রানীর শিকার হতে হয়। যার ফলে বহিরাগত ব্যবসায়ীরা এলাকায় আসতে চাই না।
তারা আরো বলেন, উপজেলার হাট বাজার থেকে মাল ক্রয়ের পর সরকারের রাজস্ব আদায় করে নেওয়ার পর ও পথে পথে অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদ ও তাদের নিকট টুল ট্যাক্স আদায় করে। তাই ব্যবসায়ীরা হয়রানীর শিকার বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
Leave a Reply