শনিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৩, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন
উথোয়াইচিং মারমাঃ
বান্দরবানের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এখনো জেলার ১টি উপজেলা। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বান্দরবানের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল। ৮ দিনপর বান্দরবানের সাথে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজরের সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।
তবে বান্দরবানের সাথে রুমার আন্তঃ সংযোগ সড়কের সাথে এখনো যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা ভেঙ্গে ও পাহাড় ধসে বন্ধ ছিলো জেলা সদরের সাথে রুমা,রোয়াংছড়ি উপজেলার যান চলাচল। এক সপ্তাহে জেলার ৩৬টি জায়গায় প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়ক পুরোপুরি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তবে থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় আজ থেকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানায় এলাকার স্থানীয় বাসীন্দারা।
এর মধ্যে থানচি-আলীকদম সড়কের ২২ কিলোমিটার এবং ওয়াইজংশন থেকে রুমা সড়কের ১৬ কিলোমিটার অংশে রাস্তা পুরোপুরি বিলীন হয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট পয়েন্টে সড়কের শোল্ডার (রাস্তার দু’পাশের অংশ) ভেঙ্গে গেছে। যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার। দুই সপ্তাহ সময় ধরে বন্ধ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় সেসব এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর সংকট দেখা দিয়েছে, সীমাহীন দূভোর্গে এইসব এলাকায় মানুষ।
এদিকে বান্দরবান-রুমা উপজেলা সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ায় বান্দরবান-রুমা সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফলে স্থানীয়রা চলাচল মাধ্যম হিসেবে বেছে নিছে একমাত্র নৌ পথে যাতায়াত। গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম,পচঁতে শুরু করেছে কাঁচামাল। যার ফলে চরম বিপাকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৮দিন টানা বৃষ্টিতে বান্দরবান-রুমা উপজেলা সড়কের ৯ মাইল,১২ মাইল দৌলিয়ন পাড়া, হিমাগ্রী পাড়া, কক্ষ্যংঝিড়িসহ বিভিন্ন স্থানের সড়ক ভেঙ্গে বড় বড় নালার সৃষ্টি হয়েছে। গত সোমবার থেকে সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয় পৌরানিক মাধ্যম নদী পথ। নৌ যোগে সময়ের ব্যয় পাশাপাশি স্থানীয়দের গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। এতে স্থানীয়া পড়ে মহাবিড়ম্বনায়।
রুমা বাজারের বাসিন্দা শৈহ্লাচিং মারমা জানান, রুমা থেকে বান্দরবান সদরে যেতে জনপ্রতি ভাড়া গুণতে হচ্ছে ছোট ইঞ্জিনবাহী নৌকা ৩০০ টাকা ও বড় ইঞ্জিনবাহী নৌকা ২০০টাকা, যা সড়ক পথে ছিল ১১০ টাকা । তাছাড়া নৌকা যোগে যাতায়াতে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হচ্ছে।
সবজি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ কালাম বলেন, ভারী বৃষ্টিতে সড়কটি ভেঙ্গে যান চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কতৃপর্ক্ষের কাছে রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারে জন্য দাবি করছি।
সওজ-এর নির্বাহী প্রকৌশলী সজীব আহম্মদ বলেছেন, বান্দরবান-রুমা-থানচি-রোয়াংছড়ি উপজেলরা প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তোলার জন্য সড়ক ও জনপথ এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ইঞ্জিনিয়ারিং টিম প্রতিনিয়ত কাজ করছে।
তিনি আরো বলেন, সড়ক যোগাযোগ আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে প্রায় ২২ থেকে ২৫ কোটি টাকা লাগতে তবে বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের যে চারটি জায়গায় পানি জমে প্রতি বছর যাতায়াত ব্যাহত হয়, সে জায়গাগুলোতে সড়ক মেরামত ও উঁচু করার কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩৫ কোটি টাকা, যা এ বছর একনেকে পাস হয়েছে। এই কাজটি বাস্তবায়ন করবে সেনাবাহিনীর ২০ ইসিবি।
এ বিষয়ে রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ শামসুল আলম জানান, ওই সড়কের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার কয়েকটি অংশ মাটিতে ধসে পড়েছে আবার কোথাও কোথাও সড়কে মাটি ধসে পড়ে রাস্তা ব্লক হয়ে গেছে।
তিনি আরো জানান, বান্দরবান রুমা সড়কে ৪৬ টি বেইলি সেতু রয়েছে। কয়েকটি বেইলি সেতুর গোড়া থেকে একেবারে মাটি সরে গেছে ।ভারী যানবাহন চলাচল তো দূরে কথা,ওই রাস্তা দিয়ে সাধারন মানুষও মোটরসাইকেল যাতায়াতের জন্য খুবই ঝুকিপূর্ণ রয়েছে।
Leave a Reply