শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৪৬ অপরাহ্ন
রিমন পালিত,স্টাফ রির্পোটারঃ
বান্দরবানে আনন্দ ও উৎসবের মধ্য দিয়ে জিংক সমৃদ্ধ ব্রী ধান -৭৪ কাটা শুরু হয়েছে। এ ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি। কৃষক ব্যস্ত সময় পার করছেন নতুন জাতের ধান কাটা ও মাড়াই কাজে।
ব্রি ধান-৭৪ জাতের বীজ ধান দিয়ে সহযোগিতা করেছে হারভেস্ট প্লাস, বাস্তবায়ন করেছে প্রকাশ গণ উন্নয়ন কেন্দ্র (পিজিইউকে)।
বসে নেই কিষানিরাও। তাঁরাও ধান ওড়ানো ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত। আর এই ধান উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ, প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করেছেন বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কর্মকর্তা ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার পিজেইউকে প্রতিনিধিরা। বান্দরবান সদর রাজবিলা ইউনিয়নে,রাজবিলা,তাঁইনখালী,মুসলিম পাড়া,বুড়ি পাড়া,রেনিং পাড়া, থংজমা, কমডং পাড়া এসব এলাকাতে জিংক ধান আবাদ হয়েছে। নতুন এই ধান আবাদ করে খুশি এ অঞ্চলের কৃষকরা। প্রতি হেক্টরে গড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৫ টন চাল উৎপন্ন হচ্ছে।
মানব দেহের একটি অত্যাবশ্যকীয় অনুপুষ্টি হল জিংক। জিংকের অভাবে শিশুদের ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। গর্ভবতী মায়ের জিংকের অভাবে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়। গর্ভের সন্তানের স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শিশুদের মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক দক্ষতার সমন্বয়হীনতা পরিলক্ষিত হয়। শিশুকাল ও বয়োসন্ধিকালে শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশে এবং বুদ্ধির বিকাশে জিংক বিশেষ ভূমিকা পালন করে। জিংকের অভাবজনিত কারণে ১৫ থেকে ১৯ বছরের শতকরা ৪৪ ভাগ কন্যাসস্তান খাটো হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। এবং গর্ভবতী মায়ের জিংকের অভাব হলে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয় এবং গর্ভের বাচ্চার ¯œায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ব্রি ধান-৭৪ জাতের ধানের এক কেজি চালে ১৯ দশমিক ৬ মিলিগ্রাম জিং ও শতকরা ৯ ভাগ আমিষ আছে।
পুসাচিং মার্মা বলেন, জিংক সমৃদ্ধ এ ধানের ফলনে আমি খুশি। কম খরচে আর অল্প সময়ে এ ধান পাওয়া গেছে। সামনের বছর থেকে এই ধান বেশি করে চাষাবাদ করবো। ধান খেতে কোন রোগ নেই,খরচ ও কম।
মংবাই মার্মা বলেন, ব্রি ধান-৭৪ মাত্র ১০০ দিনের মধ্যে কাটা যাচ্ছে। অথচ অনান্য ধান একই সময়ে রোপণ করে এর চেয়ে ১৫ থেকে ২০ দিন পর কাটতে হয়। ফলে ব্রি ধান- ৭৪ কাটার পর একই জমিতে অন্য যেকোনো রবিশস্য আবাদ করা যায়। এতে দুই ফসলি জমিতে অনায়াসে তিন ফসল আবাদ করা সম্ভব।
বাংলাদেশ ধান গবেষনা এসডিএস বান্দরবান সমন্বয়কারী কৃষিবিদ এস এম তরিকুল ইসলাম জানান, হারভেস্ট প্লাস সহযোগিতায় ও এসডিএস এর পরিচালনায় সদর উপজেলার কৃষিব্যবস্থার উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষকদের উন্নয়নে জন্য কাজ করছে। তারই অংশ হিসেবে নতুন জাতের জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ধান-৭৪ আবাদের জন্য বান্দরবান সদর,রাজবিলা ইউনিয়নে বিতরণ করেছি। বীজতলা থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত সার্বক্ষণিক কৃষকের পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: ওমর ফারুক বলেন, নতুন প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত ব্রি ধান-৭৪ মানবদেহের জিংকের অভাব পূরণ করবে। সঠিক নিয়মে চাষাবাদ করতে পারলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতিবছরই কৃষক ভালো ফলন পাবেন বলে তিনি মনে করেন।
Leave a Reply