শুক্রবার, ০৯ Jun ২০২৩, ০১:২৯ অপরাহ্ন
জসাইউ মার্মা,অনুসন্ধান রিপোর্টঃ
খেটে খাওয়া নিরীহ পাহাড়িদের কারোর জানা নেয় ডাক্তার হিমু আসলেই বিদেশী ডাক্তার? নাকি ডাক্তারের রুপধারনকারী জল্লাদ। বান্দরবানে ক্যচু বলিপাড়া বাসিন্দা খ্যাইম্রাচিং মারমা(৩০) জঙ্গলে শুকনো কাঠ খুঁজতে গিয়ে গাছের ডাল পরে তার বাম পা ভেঙ্গে যায়। তারপর তাকে আনা হয় বান্দরবানে হিমু ক্লিনিকে। হিমু ক্লিনিকে মাস খানিক চিকিৎসার পর বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সুস্থ না হওয়ায় খ্যাইম্রাচিং মারমাকে ৪ সেপ্টেম্বর তার পরিবার বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। পায়ের অবস্থা অবনতি দেখে তাকে চট্টগ্রাম হাসপাতালে রেফার করে। বোধই শুনে অবাক হলেন? হিমু ক্লিনিক এটিই আবার কোথায়? এই সেই ডাক্তার যে ডাক্তার বান্দরবান শহরে তার নিজ বাড়িতে হিমু ক্লিনিক নাম করে মাতাল অবস্থায় ছোট বড় অপারেশনের কাজ তিনি একাই সেরে ফেলেন। শুধু তাই নয় রোগীকে ইনজেকশনের ঔষুধ শরীরে না দিয়ে খাওয়ানো হয়েছে এমনও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এমনতায় ঘটেছে খ্যাইম্রাচিং মারমার সাথে। শুধু তিনি নন পাহাড়ে আরো অনেকে এই হিমু ডাক্তারের প্রতারণায় স্বীকার হয়েছেন। ক্যোয়াইনু মারমা( ৪০) গ্রাম- হ্লাসামং পাড়া, মুরুং খ্যং বান্দরবান সদর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা বিগত ৫ বছর আগে তার গলায় ছোট একটি টিউমার হয়েছিল, টিউমারটি অপারেশন করে ডাঃ হিমু। অপরেশনের পর থেকে এখন তিনি প্রায় মৃত্যুশয্যায়। বরেন্দ্র তংঞ্চংগ্যা (৫৫) বাড়ি: মাগানেং তংঞ্চংগ্যা পুর্নবাসন পাড়া, রাজস্থলী,রাঙ্গামাটি। তিনি হার্নিয়ার রোগী ছিল। এক আত্মীয়ের সূত্রে বান্দরবান লামায় ডা: হিমুর সাথে দেখা করে এবং অপারেশন করান। অপারেশন দুই সপ্তাহর পর তার নিজ বাড়িতে মারা যান।
লামা, বুলিপাড়া ও বাঘমাড়া এলাকাবাসিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কিছু কিছু এলাকায় মিজু ডাক্তার আবার কিছু এলাকায় বিদেশী ডাক্তার হিমু বলে নিজেকে দাবি করেন। পাহাড়ে,পাহাড়ে ঘুরে শরীরে টিউমার বা হার্নিয়ার রোগীদের অপারেশন করে থাকে। যখনি রোগীদেরকে অপারেশন করায় তখন তিনি থাকেন পুরো লোড অর্থাৎ মাতাল।
খ্যাই¤্রাচিং মারমা ছোট ভাই মংসিংহ্লা মারমা এর সাথে কথা বলে তিনি জানায়, গ্রামে কয়েক জনকে টিউমার অপারেশন করে সেরে ফেলে। সেই সুবাদে পরিচিত হয়ে দিদিকে ২২ জুন হিমুর বাড়ি বান্দরবানে নিয়ে আসি। পরের দিনে পায়ে অপারেশন করে। অপারেশনের সময় তার মুখ থেকে মদের গন্ধ বের হতো। অপারেশনের আগে যে ইনজেকশনের শরীরে দেয়ার কথা সেটিকে খাওয়ানো হয়, খাওয়ার পর দিদি তিন-চার বার অজ্ঞান হয়ে পরে। বর্তমানে বান্দরবান সদর হাসপাতালে মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।
এই বিষয়ে জানতে আমরা ডাক্তার হিমু মুঠো ফোনে কয়েকবার কল করি। শেষে ফোনটি ধরেন মহিলা একজন। ডাক্তার হিমু কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডাক্তার বাইরে গেছে। বান্দরবান শহরে ডাক্তারে কোন চেম্বার আছে কিনা? জানতে চাইলে ফোনটি কেটে ফেলে। ন্যাশনাল আইডি কার্ডে পাওয়া তথ্য মতে নাম: ইব্রাহিম আলী, পিতা: মো: আলী, মাতা: সামশুন্নাহার, গ্রাম: মেহের ঘোনা, ঈদগাও, কক্সবাজাবার। বর্তমানে বান্দরবান শহরে বসবাস করছে।
এ বিষয়ে বান্দরবান সিভিল সার্জন ডা: অংসুই প্রু মারমা সাথে কথা বললে তিনি জানান, এমবিবিএস ডিগ্রি ছাড়া এভাবে নিরীহ মানুষদেরকে ঠকিয়ে চিকিৎসা করা সম্পুর্ণ আইনের বর্হিভূত মারাত্মক অপরাধ। আমরা তদন্ত করে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আনবো।
Leave a Reply