শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:২৬ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বান্দরবানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৬শ পরিবারকে শক্তি ফাউন্ডেশনের ত্রাণ বিতরণ নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড় ধ্বসে শিশুসহ একই পরিবারের আহত ৪ বাান্দরবানে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে বাল্যবিবাহ নিরোধকল্পে বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন করল গ্রীনহিল দি মারমা কো অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন ৯ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন খাগড়াছড়ি মানিকছড়িতে মাশরুম চাষে সফল ইঞ্জিনিয়ার সানি মারমা বান্দরবান রাজার মাঠে শুরু হতে যাচ্ছে গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আওয়ামীলীগের ত্রি- বার্ষিক সম্মেলন: সভাপতি মংপু ও সাঃ সম্পাদক নাছির পাহাড়ে কি নাম ধরে তারা আসছে সেটা আমাদের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে না- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাঙ্গামাটি শহরে হঠাৎ দেখা মিলল ‘দাগি-বসন্ত’ পাখি বান্দরবান রাজার মাঠ সংলগ্ন পুকুর থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
মহেশখালীতে জোয়ারের পানির ধাক্কায় বিলীন হয়ে গেছে ধলঘাটার দুই গ্রাম

মহেশখালীতে জোয়ারের পানির ধাক্কায় বিলীন হয়ে গেছে ধলঘাটার দুই গ্রাম

সরওয়ার কামাল মহেশখালীঃ 
মহেশখালী উপজেলার ধলঘাটা ইউনিয়নের বনজামিরা ও শরইতলা নামক দুই গ্রাম জোয়ারের পানির ধাক্কায় বিলীন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দিন দিন জলবায়ূ পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব ও প্রতিদিনের জোয়ার ভাটার থাবায় বিছিন্ন হতে পারে ধলঘাটার অনেকাংশ এলাকা। এ অবস্থায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মান সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে । ধলঘাটা ইউনিয়নের উত্তর সুতরিয়া ৫ নং ওয়ার্ড এবং বাজার রক্ষাবাঁধ ঢেউ এর  আঘাতে পড়ে ভেঙে গিয়ে দক্ষিণ সুতরিয়ার ৭নং ওয়ার্ড বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটছে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের। এছাড়াও ঝুঁকিতে রয়েছে ধলঘাটা ইউনিয়নটি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়নের বনজামিরা নামক ৩ নং ওয়ার্ড এবং শরইতলা ৪ নং ওয়ার্ড সম্পূর্ণভাবে বিলীন হয়ে গেছে। ১৯৯১ সালের ভয়াবহ ঘূর্নিঝড়ের পর থেকে মূলত ধলঘাটায় কোন টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মিত না হওয়ায় ক্রমাগত সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের করাল গ্রাসে ধীরে ধীরে এই দুটি ওয়ার্ড সম্পূর্রূপে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে এই দুটি ওয়ার্ডের লোকজন গুলো এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছেন।

বর্তমানে এই দুটি ওয়ার্ড এর মধ্যে ৪ নং ওয়ার্ডে যেখানে বসত ভিটা নিয়ে ৪ শ পরিবার যার লোক সংখ্যা প্রায় ১৬ থেকে ১৭শ, সেখানে বর্তমানে কোন রকম ঝরাজীর্ণ অবস্থায় বসত ভিটা নিয়ে ২০ থেকে ২৫ পরিবার বসবাস করছে। ভোটার সংখ্যা রয়েছে ৮৯১ জন মাত্র। ৩ নং ওয়ার্ডের  চিত্র একই। এখানেও ৯১ এর আগে ৩০০ শত এর বেশী বসত ভিটা নিয়ে লোক সংখ্যা ছিল প্রায় ১২ থেকে ১৩ শ পর্যন্ত সেখানে বর্তমানে বসত ভিটা নিয়ে ২৫ থেকে ৩৫ পরিবার মিলে জনসংখ্যা রয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ জনের মত এবং ভোটার সংখ্যা রয়েছে ৬৫৭ জন মাত্র।

এদিকে দিন দিন জলাবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এবং প্রতিদিনের জোয়ার ভাটার থাবায় আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে ধলঘাটা ইউনিয়নটি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে একদিকে খুব দ্রুত ধলঘাটার চারদিকে টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মান করতে না পারলে অল্প দিনের মধ্যে উত্তর সুতররিয়া ৫ নং ওয়ার্ড এবং বাজার রক্ষাবাধ ভেঙে দক্ষিণ সুতরিয়ার ৭নং ওয়ার্ড বিলুপ্ত হয়ে যাবে এবং ক্রমান্বয়ে ধলঘাটা ইউনিয়নটি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জানাগেছে, বিলীন হয়ে যাওয়ার ওয়ার্ডের শত ভাগ ভোটার বাইরে অবস্থান করায় স্থানীয় ইউপি নিবার্চনে চেয়ারম্যান মেম্বারদের সহযোগিতায় অনেকটা জামাই আদর করে এলাকায় এনে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করলেও তার মধ্যে ৬০ ভাগ ভোটার অনুপস্থিত থাকে বলে এমন অভিমত সচেতন মহলের। বিলীন হয়ে যাওয়া ওয়ার্ডের ভোটার গুলো জাতীয় নির্বাচনে ১% এর উপরে অংশগ্রহণ করে না। ভোটারদের এমন অনিহা প্রকাশে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারগণ মনে করেন ভবিষৎ বিলীন হয়ে যাওয়া ওয়ার্ড গুলো রক্ষা করে জনসাধারণ গুলোকে বসত ভিটার মাধ্যমে ফিরিয়ে এনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করা না হয় তাহলে আগামীতে ধলঘাটা ইউনিয়ন বিলুপ্ত হওয়ার  সম্ভাবনা রয়েছে। অপর দিকে ধলঘাটা মাতারবাড়ীর  তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প, ধলঘাটা অর্থনৈতিক অঞ্চল, সর্বোপরি বন্দরের মত মেঘা প্রকল্প স্থাপনের সুবাদে ধলঘাটার  চারদিকে টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মান হবে এমন স্বপ্ন ধলঘাটাবাসী দেখলেও তা এখন শুধু কাল্পনিক স্বপ্ন বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

কেননা মেঘা প্রকল্পগুলো শুধু মাত্র তাদের অধিগ্রহণকৃত জমি এবং প্রকল্পের নিরাপত্তার জন্য যে টুকু   নিরাপত্তা বেষ্টনী দরকার সেই টুকুর মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং  এর বাইরে ধলঘাটার বেড়ীবাঁধ বা সড়ক নির্মানের তাদের কোন উদ্যোগ  দেখা যাইনি বলে জানা যায়। ফলে ধলঘাটা ইউনিয়ন আগে যেমন ভাঙা বেড়ি বাঁধবিহীন ছিল  বর্তমান এবং ভবিষৎ ও সেই অবস্থায় রয়ে যাবে বলে এলাকাবাসীর ধারণা।

ধলঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন,   ধলঘাটার চারদিকে টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মানের জন্য বর্তমান সাংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিকের সহযোগিতায় জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং পানি সম্পদ মন্ত্রাণালয়ে একাধিকবার তদবীর   করা হয়েছে এবং  চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ফলে কর্তৃপক্ষ অনেকবার টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মানের জন্য টেন্ডার হওয়ার কথা মুখে এবং পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটছেনা।

মহেশখালী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোঃ জামিরুল ইসলাম বলেন, ধলঘাটা দ্বীপের বিষয়টি আমার নজরে রয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

ভালো লাগলে সংবাদটি শেয়ার করুন....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2018 Bandarban Pratidin.com
Design & Developed BY CHT Technology