বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বান্দরবানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৬শ পরিবারকে শক্তি ফাউন্ডেশনের ত্রাণ বিতরণ নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড় ধ্বসে শিশুসহ একই পরিবারের আহত ৪ বাান্দরবানে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে বাল্যবিবাহ নিরোধকল্পে বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন করল গ্রীনহিল দি মারমা কো অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন ৯ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন খাগড়াছড়ি মানিকছড়িতে মাশরুম চাষে সফল ইঞ্জিনিয়ার সানি মারমা বান্দরবান রাজার মাঠে শুরু হতে যাচ্ছে গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আওয়ামীলীগের ত্রি- বার্ষিক সম্মেলন: সভাপতি মংপু ও সাঃ সম্পাদক নাছির পাহাড়ে কি নাম ধরে তারা আসছে সেটা আমাদের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে না- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাঙ্গামাটি শহরে হঠাৎ দেখা মিলল ‘দাগি-বসন্ত’ পাখি বান্দরবান রাজার মাঠ সংলগ্ন পুকুর থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
রাজাকারের সন্তানদের সরকারি চাকরিতে নিষেধাজ্ঞার দাবি

রাজাকারের সন্তানদের সরকারি চাকরিতে নিষেধাজ্ঞার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক,
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সবধরনের কোটা বাতিলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর রাজাকারদের উত্তরসূরিদের সরকারি চাকরিতে নিয়োগে বিধিনিষিধ দিয়ে আইন পাসের দাবি উঠেছে।

ভিয়েতনাম যুদ্ধে পর দেশদ্রোহীদের তিন প্রজন্মের অধিকার সংকুচিত করে আইন করা হয়েছিল জানিয়ে বাংলাদেশেও এমন আইন করার দাবি উঠেছে। আর এজন্য রাজাকারদের তালিকা করার দাবি জানানো হয়েছে।

রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযোদ্ধাদের গণজমায়েত ও মিছিলে এসব দাবি জানানো হয়।

সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের জন্য নানা সময় আন্দোলনে নেমে ব্যর্থ হওয়ার পর এবার কোটা সংস্কারের দাবিতে সব মিলিয়ে কোটা ১০ শতাংশে নামিয়ে আসার কথা বলে আন্দোলন শুরু হয়। আর সারাদেশে সরকারি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ার পর ১২ এপ্রিল সংসদে দেয়া ভাষণে কোটা থাকার দরকার নাই বলে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী।

এই পদ্ধতি চালু হলে নারী, পশ্চাদপদ জেলার পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোও সরকারি চাকরিতে কোটা সুবিধার বাইরে চলে যাবে।

মুক্তিযোদ্ধা গণজমায়েতে বক্তারা বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অনেক অপমানসূচক কথা বলা হয়েছে।

স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা বন্ধে রাজাকারদের সন্তানরা যেন সরকারি চাকরি না পায় সে ব্যবস্থা করতে সরকারকে তাগিদ দেন বক্তারা।

এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হয়ে যোগ দেয়া নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানও দাবি সমর্থন করেন। তিনি বলেন, ‘যেসব ছাত্র জামায়াত-শিবির, রাজাকারদের সন্তান, তাদের কি চাকরি দেওয়া উচিত?’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে নৌমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার বিপক্ষের মেধাকে চাকরি দেওয়া যাবে না।’

‘আমরা কোটার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করি নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে বলছি, আপনি কোটা বাতিল করেছেন মেনে নিয়েছি। কিন্তু আমাদের দাবি আপনাকে মানতেই হবে।’

কোটা সংস্কারে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যেও শাজাহান খান বলেন, ‘তোমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান নাই করতে পার, কিন্তু অপমান করতে পার না। কোটা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। এখন প্রশ্ন হলো, আমরা কাদের মেধাবী বলব? আদর্শহীন কাউকে আমরা মেধাবী বলতে পারি না।’

‘আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ আমরা যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় নিয়োজিত আছি, তারা কেউই ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হই নাই। কিন্তু আমরা রাষ্ট্র পরিচালনায় দক্ষ।’

‘যেকোনো দাবি নিয়ে ছাত্ররা আন্দোলন করতেই পারে। কিন্তু ছাত্র আন্দোলনের আড়ালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে হত্যাচেষ্টাকারী তারা কারা? তাদের খুঁজে বের করতে হবে।’

সমাবেশে ছয় দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে আছে”

# কোটা সংস্কারের নামে হত্যার গুজব ছড়িয়ে উস্কানি দিয়ে যারা অরাজকতা সৃষ্টি করেছে, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

# জামায়াত-শিবির-রাজাকার সন্তানদের চাকরিতে নিয়োগ বন্ধ করতে হবে।

# স্বাধীনতাবিরোধীরা যারা সরকারি চাকরিতে বহাল থেকে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত করছে ও মুক্তিযুদ্ধ এবং সরকারবিরোধী নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে চাকরি হতে অপসারণ করতে হবে।

# যুদ্ধাপরাধীদের সব অস্থাবর-স্থাবর সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে হবে।

#. ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে আন্দোলনের নামে যারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে এবং বেসরকারি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে, স্পেশাল ট্রাইবুন্যাল গঠন করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

#. মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ক্ষুণ্নকারী ও মুক্তিযোদ্ধা এবং বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষকারীদের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যের হলোকাস্ট বা জেনোসাইড ডিনাইল লর আদলে আইন প্রণয়ন করে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।

সমাবেশে ঘোষণা করা হয়, আগামী ৯ জুন বিকাল তিনটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের সন্তানদের নিয়ে সমাবেশেরও ঘোষণা দেয়া হয়।

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা আছে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের, ১০ শতাংশ করে নারী ও পশ্চাদপদ জেলা কোটা এবং পাঁচ শতাংশ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং এক শতাংশ কোটা প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত।

মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবিতে নানা সময় আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর এবার কোটা সংস্কারের দাবি সামনে এনে আন্দোলন শুরু করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নামে একটি সংগঠন। গত ৮ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত রাজধানী থেকে শুরু করে সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলে।

আর ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, কোনো কোটা থাকারই দরকার নেই। এরপর ছাত্ররা আন্দোলন স্থগিত করে ঘরে ফিরে যায়। তবে প্রধানমন্ত্রী কেবল বিসিএসের কথা বলেছেন নাকি সব চাকরির বিষয়ে বলেছেন, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারির পর বিস্তারিত জানা যাবে।

ভালো লাগলে সংবাদটি শেয়ার করুন....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2018 Bandarban Pratidin.com
Design & Developed BY CHT Technology