রিমন পালিত, স্টাফ রিপোর্টারঃ
বান্দরবানের লামা পৌরসভার সংলগ্ন চকরিয়া উপজেলার বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হেব্রন মিশনে এক ত্রিপুরা কিশোরী ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারী) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টায় হেব্রন মিশনের মহিলা হোস্টেলের টিউবওয়েল পাশে এই ঘটনা ঘটে।
ভিকটিম জানায়, সে টিউবওয়েলে পানি খেতে যায়। তার সাথে আরমান ত্রিপুরা ছিল। আরমানকে আহত করে মিশু বড়ুয়া তাকে ধর্ষন করেছে। আরমান ত্রিপুরা পার্শ্ববর্তী আলীকদম উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নের অভিরাম মেম্বার এর ছেলে।
হেব্রন মিশনের হোস্টেল সুপার গ্রেনার ত্রিপুরা বলেন, ভিকটিম লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও হেব্রন মিশনের হোস্টেলে থাকে। ধর্ষণের ঘটনার পর পরই লামা থানার পুলিশ মেয়ের স্বীকারোক্তি মতে অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য লামা হাসপাতালে নিয়ে আসে৷
হেব্রন মিশনের পরিচালক সুভাষ ত্রিপুরা বলেন, ঘটনাটি চরম আপত্তিকর ও ভীতিকর। মহিলা হোস্টেলে এমন ঘটনা আমাদের আতংকিত করেছে। আমাদের অন্যান্য শিশুরা ভয় পাচ্ছে। প্রকৃত দোষীর শাস্তি কামনা করছি। আমরা আইনীভাবে লড়বো।
আটক মিশু বড়ুয়া মালুমঘাট খ্রিষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালে কর্মচারী বলে দাবী করে। সে বমু বিলছড়ি হেব্রন মিশনের হোস্টেলের চাল নিয়ে এসেছিল। সে আরো বলে, আমি সিগারেট খেতে মিশনের পূর্ব পাশে গেলে সেখানে আরমান ত্রিপুরা নামে একজনকে মেয়েটির সাথে কুকর্ম করতে দেখি এবং মেয়েটির গায়ের কাপড় এক পাশে পড়ে থাকতে দেখি। সেখানে আরমানের সাথে আরো একজন ত্রিপুরা ছেলে ছিল। আমি মেয়েটির কাপড়চোপড় হাতে নিলে তারা প্রথমে আমার কাছে ঘটনা ধামাচাপা দিতে অনুরোধ করে। কিন্তু এরমধ্যে সেখানে পুলিশ হাজির হলে তারা উল্টো আমাকে ধর্ষক বলে ফাঁসিয়ে দেয়। ধর্ষক অন্য কেউ।
হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্স রেশমি দাশ বলেন, ভিকটিমের শরীরে ধর্ষণের আলামত লক্ষ্য করা গেছে। তবে মেয়েটির প্রিয়ড চলছে, বিষয়টি পরিষ্কার নয়। ডাক্তারি পরীক্ষার পরে আসল বিষয় জানা যাবে।
লামা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মো. রবিন জানান, ভিকটিমের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে পরীক্ষার জন্য বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, ঘটনাস্থল চকরিয়া উপজেলায় পড়েছে। একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমরা এখানে এসেছিলাম। অনুষ্ঠান প্যান্ডেলের পিছনে শোরগোল শুনে এগিয়ে যায়। জনতার হামলা থেকে বাঁচাতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মিশু বড়ুয়া (২৫) নামে একজনকে আমরা আটক করে থানা নিয়ে আসি। তবে ভিকটিম দাবী করে সে তাকে ধর্ষণ করেছে। মিশু বড়ুয়া চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট এলাকার আইয়ুব খানের ছেলে। আটক ব্যক্তি ও ঘটনার প্রত্যেক্ষদর্শী আরমান ত্রিপুরাকে চকরিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আইনী প্রক্রিয়া সেখানে হবে৷
বর্তমানে ভিকটিমকে বান্দরবান সরকারি হাসপাতালে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য রাখা হয়েছে।
Leave a Reply