সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন
মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধি লামাঃ
স্বামী ও শাশুড়ি কর্তৃক পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় লামা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌস (২১)। বুধবার (০৯ জানুয়ারী) সকালে লামা পৌরসভার পার্শ্ববর্তী চকরিয়ার বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মাইজপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌস বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড পশ্চিম পাড়ার মো. জহিরের মেয়ে।
লামা হাসপাতালের সিটে ব্যাথায় কাতরাচ্ছে জান্নাতুল ফেরদৌস। কান্নারত অবস্থায় সে প্রতিবেদককে জানান, ভোরে তার সন্তান রাফি মণি (১) কান্না করে। বারবার চেষ্টা করেও সে বাচ্চার কান্না থামাতে পারছিলনা। এসময় শিশুটির কান্নার শব্দে তার স্বামী নাজিম উদ্দিন (২৬) ও শাশুড়ি গোলবাহার বেগমের (৪৯) ঘুম ভেঙ্গে যায়। তারা বিরক্ত হয়ে তাকে গালিগালাজ করে। জান্নাত প্রতিবাদ করায় ক্ষোভে তার স্বামী নাজিম উদ্দিন ও শাশুড়ি গোলবাহার বেগম দা ও লাঠি দিয়ে মেরে গুরুতর জখম করে। জান্নাত আরো জানায় লাঠির আঘাতে তার শরীর ফুলে গেছে। ডান হাতের কবজিতে কেটে যায়। তাদের বিবাহের বয়স প্রায় ৩ বছর। বিয়ের পর থেকে শশুড়বাড়ির লোকজন অসংখ্য বার তাকে মারধর করেছে। স্বামী নাজিম উদ্দিন আরো যৌতুক দাবী করে। এছাড়া সে তাকে নিয়মিত ভরণপোষণের খরচ দেয়না, মদপান করে ও পর নারীদের লোভে নিয়মিত ঘরে আসেনা।
লামা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ শফিউর রহমান মজুমদার বলেন, মেয়েটিকে প্রচন্ড মারধর করা হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে তার ডান হাত, কোমড় ও পিঠের হাড় ভেঙ্গে গেছে। উল্লেখিত স্থান সমূহ এক্সরে করতে তাকে চকরিয়া প্রেরণ করা হয়েছে। ডান হাতে কেটে যাওয়ায় সেখানে সেলাই করতে হয়েছে।
জান্নাতুল ফেরদৌস এর মা হামিদা বেগম বলেন, এর আগেও অনেকবার সামাজিকভাবে বিচার শালিস হয়েছে। সবসময় টাকার দাবীতে সে আমার মেয়েকে নির্যাতন করে। আমি বিচার চাই।
এই বিষয়ে নাজিম উদ্দিনের মুঠোফোনে কথা হয়। তিনি জানান, আমার মা বাচ্চার কান্না থামাতে বললে আমার স্ত্রী কান্না থামাচ্ছিলনা এবং এসময় জান্নাত আমার মায়ের চুল ধরে ধাক্কা দেয়। এতে আমার রাগ উঠে যায়। তখন তাকে মারধর করি।
বমুবিলছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতলব বলেন, আমি বেশ কয়েকবার বিচার করেছি। এখন নাজিমকে ডাকলে আসেনা। নিষ্ঠুরভাবে অনেকবার সে মেয়েটিকে মেরেছে।
Leave a Reply