বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ১১:১২ পূর্বাহ্ন
বিশেষ রিপোর্টরঃ
পার্বত্য চট্টগ্রাম হচ্ছে বাংলাদেশের প্রাণ কেন্দ্র। যার অধিকাংশ পাহাড় আর জঙ্গল এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ভরপুর। যা দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য পরিবেশ রক্ষা করে চলেছে। পাহাড় ও বন ধ্বংসের কারনে বান্দরবান পার্বত্য জেলা আজ প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিপর্যয়ের মুখে। সেই প্রাণ কেন্দ্রটি আর রক্ষা পাচ্ছে না। দিন দিন অসাধু ও অবৈধ ব্যবসায়ীদের ছোবলে হারাচ্ছে এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ। বিলুপ্ত হচ্ছে অভয়রাণ্য ও বন্য প্রাণী। ব্যাপকহারে পাহাড় ও বন ধ্বংসের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম বান্দরবানে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও বনাঞ্চল হতে অনেক বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও জীবজন্তু আজ বিলুপ্ত। সবুজ বনানী বান্দরবান লামা ফাইতং মৌজা আজ ধূসর মরুতে পরিণত হয়েছে।
বান্দরবান লামা ফাইতং উপজেলায় এক এক করে গরে উঠেছে ব্যাঙ্গের ছাতামত ৩০টি অবৈধ ইট ভাটা। প্রতি বছর ইট ভাটার সংখ্যা বাড়ছে। যার একটিও বৈধ কাগজ পত্র নেয়, উচ্চ আদালতে মামলা রিট করে চলছে এসব ইটভাটা। ইট তৈরির জন্য মাটি ও ইট পোরানোর জন্য জ্বালানী কাঠের প্রয়োজন অপরিহার্য। এই দুইটি উপাদান ছারা ইট তৈরি করার সম্ভব নয়। এসব কাঁচামাল উপাদান চাহিদা মেটাতে গিয়ে ধ্বংস করছে প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর। পাহাড় কেটে এবং গাছ কেটে এসব চাহিদা পুরণ করা হয়।
আজকের এই আধুনিক বিশ্বে ইটের প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু নিয়ম না মেনে এই প্রয়োজনীয় বস্তু তৈরীতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পরিবেশ মানুষের স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস , স্বাস্থ্য, উর্বর মাটি এবং অতি উপকারী বায়ূ। ইট তৈরীতে পোড়ানো হচ্ছে শত শত একর জমির উর্বর অংশ এবং বনের গাছ পালা। শুকিয়ে যাচ্ছে ছোট বড় ঝিরি। এতে ধ্বংস হচ্ছে জীব বৈচিত্র পরিবেশ ও হারিয়েছে ছোট বড় ঝিরি ঝরণা। ২০-৩০ লাখ ইট তৈরীতে ২০-২৫ হাজার মণ জ্বালানি কাঠ প্রয়োজন। ৩০টি ইট ভাটার জন্য প্রায় ৭ লক্ষ ৫০ হাজার মণ জ্বালানি কাঠ লাগে প্রতি সিজনে। জ্বালানি কাঠ মেটাতে গিয়ে উজার হচ্ছে বন। সেই সাথে সমানভাবে কাটা হচ্ছে পাহাড়।
ইট ভাটার পরিচালনার জন্য নেই কোন বৈধ কাগজ পত্র তার উপর চলে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস। যেন মরার উপর খরার ঘা। এভাবে চলতে থাকলে ফাইতং এলাকায় পাহাড় এবং বনে একটিও গাছের অস্তিত্ব থাকবেনা। থাকবে শুধু মরুভূমির, গাছ ও পাহাড় বিহীন পার্বত্য এবং ঝিরি-ঝরণা বিহীন মরুভূমি ফাইতং। পাহাড় আর বন-জঙ্গল, ঝিরি-ঝরণা না থাকলে ওখানকার বাসিন্দাদের টিকে থাকা এখন সময়ের ব্যাপার।
চলমান(১)
Leave a Reply