শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন
আব্দুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধিঃ
রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড জুনাইম্মার ঘোনা নামক স্থান থেকে হাতির আক্রমন থেকে ধান ক্ষেত রক্ষার জন্য পাহারারত অবস্থায় টংঘর থেকে দুই কৃষককে অপহরন করেছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এ সময় ঐ গ্রামের দুই বসত বাড়ীতে লুটপাট চালিয়েছে তারা। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ফরেষ্ট অফিস সংলগ্ন ব্যাংডেবার মুখ নামক স্থানে।
অপহৃত কৃষকেরা হলো- ঈদগড়ের ৯নং ওয়ার্ড ব্যাংডেবার মুখ নামক গ্রামের বাসিন্দা নজির আহমদের পুত্র ছৈয়দুল হক (২০), মৃত মোজাহের আহমদের পুত্র নুর আহমদ (৪০)।
প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল করিম ও লুতু মিয়া জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ৭/৮ জনের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল ধান ক্ষেতে পাহারারত অবস্থায় টংঘরে গিয়ে অস্ত্রের মুখে তাদের নামিয়ে নিয়ে আসে। এরপর পাশর্^বর্তী ধানক্ষেত পাহারারত ছৈয়দুল হক ও নুর আহমদের টংঘরে গিয়ে তাদের দু’জনকেও সাথে করে নিয়ে হাত বেঁধে ফেলে। ঐ সময় সন্ত্রাসী দলের সদস্যরা পার্শ^বর্তী গ্রাম বেংডেবার মুখ নামক জায়গার আক্তার হোসেন ও ছৈয়দ হোসেনের বসত বাড়ীতে ঢুকে লুটপাট চালায় এবং বসত ঘরে রক্ষিত মোবাইল, স্বর্ণালংকার সহ রান্না করা ভাত, মাংস ও তরি-তরকারী, চাউল সহ সবকিছু নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে আমরা দু’জনকে ছেড়ে দিলেও ছৈয়দুল হক ও নুর আহমদকে অপহরন করে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।
অপহৃত ছৈয়দুল হকের মা মাহমুদা বেগম জানান, ছেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ৫ ঘন্টা পর তার ছেলের ব্যবহৃত মোবাইল থেকে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। এছাড়া অপহৃত নুর আহমদের স্ত্রী আমেনা খাতুন জানান, তার স্বামীর মোবাইল থেকে অপহরনকারীরা ২ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। দাবীকৃত মুক্তিপনের টাকা সময়মত পরিশোধ না করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।
খবর পেয়ে ঈদগড় পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এএসআই মোর্শেদ সঙ্গীয় ফোর্স সহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সন্ত্রাসীদের ধরতে ও অপহৃতদের উদ্ধারে সম্ভাব্য স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হবে এবং মুক্তিপন ছাড়াই অপহৃতদের উদ্ধারে পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে।
সরজমিনে এই প্রতিবেদক ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অপহৃত ছৈয়দুল হকের মা মাহমুদা বেগম ও নুর আহমদের স্ত্রী আমেনা খাতুন সহ পরিবারের সকল সদস্য ও আত্বীয়-স্বজনরা বিলাপ করে কান্নারত অবস্থায় রয়েছে। এসময় স্বামীকে মুক্তি দিতে স্ত্রী আমেনা খাতুন মোবাইল ফোনে আহাজারী করে বলেন, চারটি অসহায় ও নিস্পাপ সন্তানের দিকে থাকিয়ে আমার স্বামীকে মুক্তি দাও।
ছৈয়দুল হকের পিতা নজির আহমদ এই প্রতিবেদককে জানান, তারা খুব গরীব ও অসহায়। কিভাবে এত টাকা জোগাড় করে ছেলেকে উদ্ধার করবে তা নিয়ে শংকিত। তিনি আরো জানান, সন্ত্রাসীরা তার ছেলের মোবাইল থেকে কিছুক্ষন পরপরই মুক্তিপনের টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। অন্যতায় জানে মেরে ফেলারও হুমকি দিচ্ছে এবং ছেলেকে মারধর করছে।
এই রিপোর্ট পাঠানো পর্যন্ত অপহৃতদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে উদ্ধারের জন্য মোবাইল ফোনে দরদাম কষাকষি চলছে পাশাপাশি পাশর্^বর্তী গহীন পাহাড়ে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Leave a Reply