শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:৪০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
রাঙ্গামাটিতে দোলযাত্রা হোলি রঙের উৎসব পালিত বান্দরবানে উদযাপিত করল জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২৩ বান্দরবান দলবনিয়া এলাকায় বন্যা দূর্গতদের মাঝে মোবাইল হেলথ ক্যাম্প ইউপিডিএফের ৪ নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে মানিকছড়িতে অবরোধ চলছে কলাবতী শাড়ি আগামীতে দেশের বাইরে রপ্তানিতে ছেয়ে যাবে – শাহ্ মোজাহিদ রোয়াংছড়ি তুলাছড়ি পাড়ায় প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারে পিআইসি’র কমিউনিটি চার্টার বিষয়ক মতবিনিময় বান্দরবানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৬শ পরিবারকে শক্তি ফাউন্ডেশনের ত্রাণ বিতরণ নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড় ধ্বসে শিশুসহ একই পরিবারের আহত ৪ বাান্দরবানে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে বাল্যবিবাহ নিরোধকল্পে বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন করল গ্রীনহিল দি মারমা কো অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন ৯ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন
উখিয়ায় বিলুপ্তির পথে ধানের গোলা

উখিয়ায় বিলুপ্তির পথে ধানের গোলা

শফিক আজাদ,উখিয়া সংবাদদাতাঃ

উখিয়া উপজেলায় এখনো কিছু গোলা চোখে পড়ে, যেগুলো পূর্বপুরুষেরা স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছেন কৃষকেরা। গ্রামে-গঞ্জে এক সময় অবস্থা সম্পন্ন কৃষকের বাড়িতে শোভা পেতো ধানের গোলা। যাদের জমির পরিমাণ একটু বেশি তারা ধান সংরক্ষণের জন্য এই বাঁশের গোলা ব্যবহার করতেন।

গ্রামবাংলার সমৃদ্ধির প্রতীক ধানের গোলা খুবই উপযোগী। ধানের মৌসুমে ধান কেটে শুকিয়ে গোলায় রাখা হয়। প্রয়োজনের সময় গোলা থেকে ধান বের করে পুনরায় রোদে শুকিয়ে ধান ভাঙানো হয়। অথচ বর্তমানে অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে এই ধানের গোলা। তবুও পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এখনো কেউ কেউ এই ধানের গোলা রেখে দিয়েছেন। এসব ধানের গোলায় ৮০ থেকে ১০০ মণ ধান সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। উখিয়া উপজেলার ডেইলপাড়া এলাকায় এখনও চোখে পড়ে এসব ধানের গোলা।

ঐ গ্রামের হোছন আলী (৬২) বলেন, ‘এক সময়ে নামকরা গেরস্থ বলতে- মাঠ ভরা সোনালি ফসলের ক্ষেত, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ আর কৃষকের গোলা ভরা ধানকেই বুঝাতো। ‘কিন্তু এসব এখন যেন প্রবাদ বাক্যে পরিণত হয়েছে। হারিয়ে গেছে গেরস্থের ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা। তবুও আমরা পুর্বপুরষদের ব্যবহৃত সেই ধানের গোলা স্মৃতি স্বরূপ সংরক্ষণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

তিনি জানান, তিনি ও তার চাচাতো ভাইয়ের তিনটা ধানের গোলা রয়েছে। সেই গোলাগুলো এখনো ভালো আছে। গোলাতে ধান সংরক্ষণ করছেন। অবশ্য এখন আর আগের মতো কেউ ধান রাখে না। বস্তায় করে গোডাউন অথবা ঘরের মধ্যে রেখে দেন।

রাজাপালং ইউনিয়নের পূর্বডিগলিয়াপালং গ্রামের নুরু মিয়া(৩৪) জানান, প্রথমে বাঁশ-কঞ্চি দিয়ে গোল আকৃতির কাঠামো তৈরি করা হতো। ভেতরে ও বাইরে আস্তরণ লাগিয়ে তৈরি করা হতো এই ধানের গোলা। ধানের গোলায় ঢুকে ক্ষতি করতে পারতো না ইঁদুরও। গোলায় শুকানো ভেজা ধানের চাল হতো শক্ত। কৃষকের কাছে এটিই ছিলো ধান রাখার আদর্শ পন্থা।

সিকদার বিল এলাকার জানে আলম বলেন, ‘গোলাগুলো আমাদের পরিবারের ঐতিহ্য বহন করে। দাদার আমল থেকে দেখে এসেছি এগুলো। ধান রাখার পাশাপাশি ঐতিহ্য রক্ষায় তাই এখনো রেখে দিয়েছি।’

ওই এলাকার শাহ জাহান নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘এখন আর গোলার প্রচলন বা কদর নেই। ড্রাম-বস্তাতেই ধান রাখি। যে ধান পাই, তা তো বিক্রি করে আর খেতেই ফুরিয়ে যায়। গোলায় রাখবো কী? তবুও অযতেœ অবহেলায় রেখে দিয়েছি। একদিন এভাবেই শেষ হয়ে যাবে।’

একই উপজেলার করইবনিয়া গ্রামের মনছুর আলী বলেন, ‘বাবার প্রায় একশো বিঘা জমি ছিলো। প্রতিদিনই কৃষকরা কাজ করতেন। ধান ছাড়াও বিভিন্ন চৈতালী ফসল ফলানো হতো সেসব জমিতে। ধানসহ অন্যান্য ফসল সংরক্ষণের জন্য ছিলো বেশ কয়েকটি গোলা। কিন্তু এখন আর সেসব নেই। একটিমাত্র গোলা রয়েছে সেটিও স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছি।’

ভালো লাগলে সংবাদটি শেয়ার করুন....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2018 Bandarban Pratidin.com
Design & Developed BY CHT Technology