বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৮:১৩ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
রাঙ্গামাটিতে দোলযাত্রা হোলি রঙের উৎসব পালিত বান্দরবানে উদযাপিত করল জাতীয় সমাজসেবা দিবস-২০২৩ বান্দরবান দলবনিয়া এলাকায় বন্যা দূর্গতদের মাঝে মোবাইল হেলথ ক্যাম্প ইউপিডিএফের ৪ নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে মানিকছড়িতে অবরোধ চলছে কলাবতী শাড়ি আগামীতে দেশের বাইরে রপ্তানিতে ছেয়ে যাবে – শাহ্ মোজাহিদ রোয়াংছড়ি তুলাছড়ি পাড়ায় প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারে পিআইসি’র কমিউনিটি চার্টার বিষয়ক মতবিনিময় বান্দরবানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৬শ পরিবারকে শক্তি ফাউন্ডেশনের ত্রাণ বিতরণ নাইক্ষ্যংছড়িতে পাহাড় ধ্বসে শিশুসহ একই পরিবারের আহত ৪ বাান্দরবানে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে বাল্যবিবাহ নিরোধকল্পে বিষয়ে ওরিয়েন্টেশন করল গ্রীনহিল দি মারমা কো অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন ৯ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন
কেশবপুরে মাহাতাবের বাঁশির সুরে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি এসে জড়ো হচ্ছে শরীরে

কেশবপুরে মাহাতাবের বাঁশির সুরে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি এসে জড়ো হচ্ছে শরীরে

আ.শ.ম. এহসানুল হোসেন তাইফুর, কেশবপুর থেকে:
কেশবপুরে ৪২ বছরের মহাতাব মোড়ল পেশায় মৌয়াল (মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহ করা)। এ ক্ষুদ্র কীটের কাজই হলো মধুর চাক বানানো। সাধারণত মৌমাছি জঙ্গলের গাছে চাক বানায়, পরিত্যক্ত বাড়ির কোন স্থানেও গড়ে তাদের বাসা। কিন্তু মৌমাছি তাদের বাসা যদি কোন ব্যতিক্রম স্থানে হয় তো কথাই নেই। মাহাতাবের বাঁশির সুর শুনে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি এসে জড়ো হয় তার শরীরে। নিজের সমন্ত শরীরে মৌমা

ভন ভন করে চারপাশেই উড়ে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার মৌমাছি। ছোট বেলা থেকেই এলাকার মধু সংগ্রহকারীদের সঙ্গেই থাকেন তিনি। মাত্র ১২ বছর বয়স থেকেই মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহ শুরু করেছিলেন মহাতাব। এই অভ্যেস আর মৌমাছিদের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় তাঁর নাম হয়ে উঠে মহাতাব মোড়ল ওরফে মহাতাব মধু। গ্রামের নাম মোমিনপুর।

কেশবপুর উপজেলার হাসপানপুর ইউনিয়নের সাজানো, সুন্দর মনোরম পরিবেশে মৌয়াল মহাতাব মোড়লের বসবাস। তিনি ওই গ্রামের মৃত কালাচাঁদ মোড়লের ছেলে। মহাতাব মোড়ল ওরফে মহাতাব মধু ২০ বছর ধরে নিজ এলাকার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় গিয়ে মধু সংগ্রহ করাই তার পেশা। এ পেশায় উপাজিত অর্থেই চলে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তাঁর পরিবার। ছেলে বর্তমানে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অস্টম শ্রেণির ছাত্র। মেয়ের বিবাহ হয়ে গেছে। স্ত্রী সন্তান নিয়ে বেশ ভালোই আছেন তিনি।

সরেজমিন তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ৪২ বছর বয়সী মহাতাব মোড়ল ওরফে মহাতাব মধু হাতে লম্বা এক বাঁশি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর উঠানে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যক্তিরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বাঁশির সুরে কিভাবে মৌমাছি তাঁর শরীরে বাসা (চাক) বাঁধবে সেটা দেখার জন্য। এরপর তিনি বাঁশি বাজাতে শুরু করলেই হাজার হাজার মৌমাছি তাঁর শরীরের দিকে আসতে শুরু করে।

সে বাঁশির এক অচেনা সুরের আকর্ষণে ঝাঁকে ঝাঁকে তাঁর নগ্ন শরীরে হাজার হাজার মৌমাছি এসে বসতে শুরু করে। এক সময় পরিণত হয় মৌচাকে। আর তাঁর আশেপাশে থাকা লোকজন ছবি তুলতে ব্যস্ত। অথচ তিনি কি-না হাজার হাজার মৌমাছি শরীরে নিয়ে দিব্যি দাঁড়িয়ে বাঁশি বাজাচ্ছেন।

এই বিশেষ কার্মকান্ডের কারণে এলাকায় তিনি মহাতাব মধু নামে বেশ পরিচিতিও পেয়েছেন। ধারণা করা যায় একটি মৌমাছি শরীরে কামড় দিলেই সে স্থান ফুলে বালিশ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে ব্যথা ফ্রি। এর পরও তিনি কি-না হাজার হাজার মৌমাছি শরীরে নিয়ে দিব্যি দাঁড়িয়ে আছেন জীবন্ত মৌচাক হয়ে। মৌমাছির ঝাঁক তার পুরো শরীর নিজেদের দখলে নিয়ে নেয়।

এমন অদ্ভুত ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজের বিষয়ে তিনি জানান, ‘আমার বয়স যখন ১২ বছর; তখন থেকেই আমি মজার ছলে মৌ চাক থেকে মধু সংগ্রহ করতে শুরু করি। গত ২০ বছর আমি মধু সংগ্রহকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি। ‘প্রথমে একটি দু’টি মৌমাছি শরীরে নিতে নিতে এখন হাজার হাজার মৌমাছি আমার শরীরে বসলে কিছুই উপলব্ধি করতে পারি না। প্রথমে এনিয়ে অদ্ভূত অনুভূতি হলেও ধীরে ধীরে এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। বিষয়টি আমার জন্য সহজ হয়ে গিয়েছে।’ মৌমাছিদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হয়, কখনও আঘাত করলে কামড়িয়ে যাগায় ব্রেক করে দেবে। মৌমাছিদের নিয়ে তাঁর কোনও সমস্যা হয়নি।
কীভাবে তার শরীরে এতো মৌমাছি বসে তা জানাতে গিয়ে মহাতাব বলেন, ‘এর জন্য শরীরকে আগে থেকেই প্রস্তুুত করতে হয়’। তিনি প্রথমে মধু সংগ্রহের বালতি বাজালেই অল্প কিছু মৌমাছি তার শরীরে এসে বসত। এরপর তিনি বালতির পরিবর্তে থালা বাজিয়ে মৌমাছিকে তার শরীরে বসাতে শুরু করেন। এখন তিনি বালতি, থালার পরিবর্তে বাঁশি বাজান আর সেই বাঁশির অচেনা সুরের আকর্ষণে ঝাঁকে ঝাঁকে তাঁর নগ্ন শরীরে হাজার হাজার মৌমাছি এসে বসতে শুরু করে। এক সময় পরিণত হয় মৌচাকে।

ভালো লাগলে সংবাদটি শেয়ার করুন....

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2018 Bandarban Pratidin.com
Design & Developed BY CHT Technology