শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৪৮ অপরাহ্ন
সরওয়ার কামাল, মহেশখালীঃ
মহেশখালীতে একের পর এক মেঘা উন্নয়ন প্রকল্পে পাল্টে যাচ্ছে উপজেলার চিত্র । বিশেষ করে উপজেলার মাতারবাড়ীতে ১৪’শ ও ১২’শ একর জায়গার উপর নির্মিত হচ্ছে ২৬শ মেঘাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দু’টি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে । ইতিমধ্যে মাতারবাড়ীর দক্ষিণে ১৪’শ ১৪ একর জায়গায় ১৪শ মেঘাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ প্রায় ৫০% সমাপ্ত হয়েছে ।
আর মাতারবাড়ীর পশ্চিমে নৌ-বন্দর নির্মাণও চলছে জরিপ কাজ । সব মিলিয়ে মাতারবাড়ী হতে যাচ্ছে মিনি সিঙ্গাপুর । তার পরেও মাতারবাড়ী সাগর পাড়ের মানুষের আর্তনাদে যেন আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠছে ।
মাতারবাড়ীর প্রতিটি ঘরে ঘরে চলছে নিরব কান্নার রোল । মাতারবাড়ীতে এত উন্নয়ন তার পরও সুখে নেই এ ইউনিয়নের মানুষ গুলো,বর্ষা শুরু হলেই পানির সাথে যুন্ধ করে চলতে হয় তাদেরকে । সাগরের জোয়ারের পানি আর বৃষ্টির পানিতে সৃষ্ট জলোচ্ছাসে তলিয়ে গেছে মাতারবাড়ীর দক্ষিণ রাজঘাট,বিল পাড়া,উত্তর সিকদার পাড়া,দক্ষিণ সাইরার ডেইল সহ অনেক নিম্নাঞ্চল ।
এদিকে মাতারবাড়ী ইউনিয়নটি বঙ্গোপসাগরের মোহনায় হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় ও দূর্যোগের তোপের মূখে থাকে প্রতিনিয়ত । বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগে মাতারবাড়ীর মানুষ গুলো সব চাইতে বেশি ক্ষতি গ্রস্ত হয়ে থাকে । স্থায়ীভাবে ব্ল-ক দিয়ে বেড়িবাঁধ সংস্কার না করার কারণে বার বার ক্ষতির সম্মুখীন হয় উপকূলের এই গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন । ক্ষতিগ্রস্ত মাতারবাড়ীবাসীর বেড়িবাঁধ সংস্কার ও স্লুইচগেট নির্মাণের দাবী দীর্ঘ দিনের হলেও নানা অজুহাত দেখিয়ে কাজের কোন প্রকার অগ্রগতি হয়নি এখনো । ফলে অতীতেও উপকূলের লাখো মানুষ অকালেই প্রাণ হারায় সর্বনাশা বঙ্গোপসাগারে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আর সাগরের বিশাল জলরাশিতে ।
মাতারবাড়ী পশ্চিমের বেঁড়িবাধের পাশে বসবাসকারী লোকজন জানান, গেল ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু ও ফণি’র প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছসে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে ছিল মাতারবাড়ীতে তা এখনো পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়াতে পারে নি অনেক অসহায় পরিবার । ঘুমানোর জন্য ছিলনা কোনো নিরাপদ বাসস্থান । কিন্তু তার পরেও এ নিয়ে খুব বেশি আক্ষেপ নেই তাঁদের । সবার আগে স্থায়ী বেড়িবাঁধ চান তারা। অপরদিকে মাতারবাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিমে ষাইটপাড়া এলাকায় বেড়িবাঁধের আধাঁ কিলোমিটার এলাকা নতুন করে সাগরে বিলীন হতে চলেছে । পাকা বেড়িবাঁধের বড় অংশ ধসে যাওয়ায় আতঙ্কে দিন কাটছে মাতারবাড়ীর ৯০ হাজার বসবাসকারী মানুষের। বেড়িবাঁধের বাকি এক কিলোমিটার অংশও যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। তেমনটা হলে পুরো ইউনিয়ন সাগরের পানিতে তলিয়ে যাবে। ফলে চলতি বর্ষা মৌসুমে উপজেলার মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয় লোকজন। মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহ বার-বার পানি নিস্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দাবী জানালেও কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী এতে কোন কর্ণপাত না করে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানালেন ভুক্তভোগীরা ।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাষ্টার মোহাম্মদ উল্লাহ’র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন , গত দুই দিন আগে ইউএনও এসে ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ সহ বিভিন্ন এলাকা দেখে গেছেন । তিনি এ ব্যাপারে আমাকে একটা প্রতিবেদন তৈরি করে জমা দিতে বলেছেন । আমরা চাই এই এলাকর বাসিন্দাদের নিরাপদে থাকতে পারে তার জন্য কতৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করেন।
Leave a Reply