বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৯:১১ অপরাহ্ন
অংগ্য মারমা,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ
পার্বত্য চট্টগ্রামের ভিন্ন ভিন্ন এগারটি ভাষাভাষি আদিবাসী পাশাপাশি বাঙ্গালী বসবাস । পার্বত্য অঞ্চলের বসবাসরত আদিবাসীদের জীবন প্রনালী , ভাষা , সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বৈচিত্র্যময় । এসব জনগোষ্ঠীদের ভাষা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ভিন্ন হলেও জীবন প্রনালী ও জীবিকা একই সূত্রে গাথা জুম চাষ ।
পাহাড়ের মাটি উবর্র। ফলদ গাছ রোপনে সামান্য যতœ নিলে বেড়ে উঠে গাছগুলো। আগে পাহাড়ের বসবাসকারীরা আদিবাসী ও বাঙালীরা জুম চাষ না হয় জমিতে আমন এবং বোরো ধান চাষের নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু এখন সময়ের পরিবর্তনে বিভিন্ন ফলদ আম্রপালি জাতের বাগান স্থাপনে পাহাড়ি এলাকায় এক বিপ্লব সৃষ্টি হয়েছে। এখানে পোকামাকড়ের উপদ্রব কম হওয়া এ আমের মিষ্টতা বেশি, যা অন্য জেলাতেও যথেষ্ট সমাদৃত। বাগানি আমের ভালো দাম পাচ্ছে, আবাদে আরও উৎসাহিত হচ্ছে আম্রপালি বাগান মালিকরা।
বাংলাদেশে অনেক জাতের আম পাওয়া যায়। তার মধ্যে আম্রপালি উল্লেখ্যযোগ্য। অল্প জমিতে বেশি গাছ, প্রতি বছর গাছে বেশি করে ফল ধরা, ফল মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় অল্প সময়ে আম্রপালি জাতের আম সারা দেশে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
এসব কারনে আম্রপালি জাতের বাগান তৈরিতে মানুষের মধ্যে প্রচুর আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। বাগান করা ছাড়াও মানুষ শখ করে বসতবাড়ির আশপাশে, আমের গাছ রোপণ করছে। বাংলাদেশে আমের জগতে আম্রপালি একটি গুরুন্তর্পূণ প্রবর্তন। উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি, যেখানে বৃষ্টির পানি জমে না এবং রোদ পড়ে এ ধরনের মাটিই আম্রপালি চাষের জন্য উপযোগী। উবর্র দোআঁশ মাটিতে আম্রপালি জাতের আম ভাল জম্মে।
বর্তমানে হাটবাজারে মৌমৌ করছে পাহাড়ের সুস্বাদু আম্রপালি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর ফলন ভাল হওয়ায় বাম্পার ফলন হয়েছে। সুষ্ঠু ভাবে বাজারজাতের সুযোগ পেলে গতবছরের লোকসান গুছিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন পাহাড়ের বাগান মালিকরা।
খাগড়াছড়ি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের তথ্যমতে, গত ২০১৭ সালে বৈরি আবহাওয়ার কারণে বেশিরভাগ কৃষকের আ¤্রপালী আম গুটিতেই নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ২,৯৩০ হেক্টর জমিতে আম চাষ করে কৃষকেরা মাত্র ১৪,৬৫০ মেট্টিক টন আম পায়। যেখানে ২০১৬ সালে ২,৭৯০ হেক্টর জমিতে আমের ফলন ছিল ২৭,৩৪২ মেট্রিক টন, ২০১৫ সালে ২,৬০৯ হেক্টর জমিতে আমের ফলন ছিল ২০০৮৬ মেট্রিক টন। চলতি বছর আমের ফলন আরও বেড়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ চলতি বছর আবাদি জমির পরিমাণ ৩,০০০ হেক্টর বলছেন এবং আশা করছেন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার মেট্টিক টন আম্রপালীর উৎপাদন হবে শুধু খাগড়াছড়িতে। কেজি প্রতি গড়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে ধরলেও যার আর্থিক মূল্য কয়েক কোটি টাকা হবে।
জেলা শহরের গুগড়াছড়ি এলাকার চাষী বাবু মারমা বলেন, প্রায় ১০ হেক্টর জমিতে আম্রপালী চাষ করেছেন। এবছর আবহাওয়া ভাল ছিল। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পরামর্শ মেনে বাগানের পরিচর্যা করায় ফলন আশানুরূপ হয়েছে।
তিনি বলেন, এবার সব মিলিয়ে ৭০ থেকে ৮০ মেট্রিক টন আম পাবেন। যা গত বছরের চেয়ে তিনগুন বেশি। আম্রপালী বাজারে বিক্রী করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ সফর উদ্দিন বলেন, জুন মাসে আম্রপালী বাজারজাতের উপযুক্ত সময়।
Leave a Reply